বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক তরুণী। এরপর সেখানে থেকে চট্টগ্রামে বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করেছে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া সেই তরুণী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত টমটম (ইজি বাইক) চালক রুবেল (১৯) ও ওই তরুণীর বন্ধু জিসানুল ইসলামকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডির হেডকোয়ার্টার্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
এ ঘটনায় ভিকটিম তরুণীর বোন জিসানুল ইসলাম ও টমটমচালক রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিএমপির বায়েজিদ বোস্তামী থানায় ৪ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে এক বছর ধরে জিসানুল ইসলামের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই তরুণীর। জিসান মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় একটি মিষ্টির কারখানায় কাজ করতেন, পরে কক্সবাজারে বেশি বেতনে চাকরি পেয়ে নতুন কর্মস্থলে চলে যান। তবে মোবাইলে ওই তরুণীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো।
একপর্যায়ে ৩১ মে জিসানের আমন্ত্রণে ওই তরুণী তার বান্ধবীকে নিয়ে কক্সবাজারে দেখা করতে যায়। কক্সবাজারে যাওয়ার পর জিসান জানান তিনি ব্যস্ত, দেখা করতে পারবেন না। পরে ওই তরুণী জানায় জিসানের সঙ্গে দেখা না করে যাবে না।
চট্টগ্রামে ফিরে যাওয়ার জন্য বান্ধবীকে নিয়ে একটি টমটমে করে বাসস্ট্যান্ডে যায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই তরুণী। টমটমচালক রুবেল তার কাছ থেকে ঘটনা জানার পর আশ্বস্ত করে জিসান তার পূর্বপরিচিত। তাকে সময় দিলে সে যেভাবেই হোক জিসানের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করে দেবে।
টমটমচালকের কথায় আশ্বস্ত হয়ে তা বিশ্বাস করে তরুণী। এরপর রুবেল তার বান্ধবীকে একটি চট্টগ্রামগামী বাসে তুলে দেয়। পরে জিসানকে খুঁজে বের করার অভিনয় শুরু করে রুবেল। ওই তরুণীকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করে কালক্ষেপণ করে।
জিসানকে খবর দেওয়া হয়েছে এবং সে রাতের বেলা এসে জিসানের পরিচিত ৬ নম্বর ঘাটের পার্শ্ববর্তী ‘হোটেল আলামিন’-এ এসে ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করবে মর্মে মিথ্যা তথ্য দেয় এবং এ কথা বলে ওই হোটেলে রুম নিয়ে দেয়। এরপর রাতে জিসান এসেছে মর্মে রুবেল হোটেলের রুমের দরজা খোলার জন্য তাকে বললে সে দরজা খুলে দেয়।
তখন রুবেল ওই হোটেল রুমে প্রবেশ করে তরুণীকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে কৌশলে পালিয়ে যায়। এরপর ওই তরুণী নিরুপায় হয়ে ১ জুন রাতে চট্টগ্রামে তাদের বাসায় ফিরে আসে। ৩ জুন ভোর ৪টার থেকে সকাল ৭টার মধ্যে সবার অগোচরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।