ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি পাটখেত থেকে নূপুর সাহা (২৫) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে ভাঙ্গা পৌর সদরের চৌধুরীকান্দা সদরদী এলাকার একটি পাটখেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এলাকাবাসী, নূপুরের পরিবার ও বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকালে নূপুর আদ্-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের কিস্তির টাকা তুলতে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। সারা দিন বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবার ও সংস্থাটির লোকজন নূপুরকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
কিন্তু কোথাও তাঁর সন্ধান মেলেনি। আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পৌর সদরের চৌধুরীকান্দা সদরদী এলাকার একটি পাটখেতে নূপুরের লাশ দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা-পুলিশ বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে।
নূপুর সাহা ভাঙ্গা পৌরসভার রায়পাড়া সদরদী গ্রামের নরেশ্বর রায়ের স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বড় গোয়ালদী গ্রামে। সাত বছর আগে তাঁর সঙ্গে নরেশ্বর রায় ওরফে কার্তিকের বিয়ে হয়। তাঁদের ছয় বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। তিনি ভাঙ্গা পৌর সদরের হোগলাকান্দিতে অবস্থিত আদ্-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার নামের একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সংস্থাটির ভাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক মো. খায়রুল হোসেন বলেন, চৌধুরীকান্দা সদরদী, রায়পাড়া সদরদী ও কৈডুবি সদরদী এলাকার কিস্তি তুলতেন নূপুর। গত মঙ্গলবার সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে কিস্তি তুলতে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নূপুরের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। ওই সময়ের মধ্যে নূপুর কিস্তির ১ লাখ ২০ হাজার টাকা তোলেন। তবে বেলা আড়াইটার পর থেকে নূপুরের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সহকারী পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, গরমের কারণে এক রাতের মধ্যেই লাশটি অর্ধগলিত হয়ে গেছে। হত্যার আগে ওই গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, পাটখেতে লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে তিনি ও সহকারী পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জেলা সদর থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। লাশটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।