সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন ৬১ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন ৬১ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এতে করে ডিপোতে নতুন করে কোনো বিস্ফোরণের ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম বলেন, এখন তারা ক্ষয়ক্ষতি ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। কিছু কনটেইনার ডিপোতে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। কিছু রাসায়নিক কনটেইনার শনাক্ত করা হয়েছে।আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ডিপোর ফটকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা জানান। ডিপোতে ভয়াবহ আগুন-বিস্ফোরণের ঘটনায় গত রোববার থেকে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করে আসছে সেনাবাহিনী।
আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। আপনারা জানেন কিছু কনটেইনারে কাপড়ের পণ্য আছে। ওইগুলো পানি দেওয়ার ফলে ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে ভয়ের কিছু নাই বলে আমি মনে করি। এ ছাড়া আর যাতে হতাহত না ঘটে তার জন্য আমরা গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছি।
এ কারণে যেগুলো থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে, সেগুলোর আশেপাশে আমরা কম যাচ্ছি। আমরা আর কোনো হতাহত চাই না। ’আমাদের টার্গেট হচ্ছে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে, কিন্তু আর যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিল এবং থাকবে’, জানান এই কর্মকর্তা।
কী পরিমাণ রাসায়নিক কনটেইনার ডিপোতে আছে, তা এখনো নিশ্চিত নন বলে জানান আরিফুল ইসলাম। এ সময় ঢাকা থেকে একটা বিশেষজ্ঞ দল এসে ডিপোতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।আরিফুল ইসলাম বলেন, আসলে এখানে কী পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এখানে যারা কর্মরত ছিলেন তাদের অনেকেই নিহত এবং আহত হয়েছেন। অনেক নথি পুড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আরেকটি তথ্য দিতে চাই, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখানে এসেছে। এখানে বিপজ্জনক আর কিছু আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখছেন। তাদের কাছ থেকে আমরা একটা ফাইনাল রিপোর্ট পাব। সেখানে আমরা দেখব আর কোনো বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। এটুকু আমরা বলতে পারি, প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে।’
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন লাগার পর রাসায়নিকের কনটেইনারে একের পর এক বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। আগুনে পুড়ে এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যসহ নিহত হয়েছেন ৪১ জন।
অবশ্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সিভিল সার্জনের কার্যালয় গত রোববার রাতে মৃত মানুষের সংখ্যা ৪৯ বলেছিল। গতকাল তারা বলেছে, গণনার সময় ভুল হয়েছিল, নিহত মানুষের প্রকৃত সংখ্যা ৪১ হবে। অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ সদস্য, ডিপোর কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিকসহ দুই শতাধিক।