বর্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত বছরের এ সময়ের তুলনায় এবার ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।
ডেঙ্গুর জীবাণু মানুষের শরীরে আসে এডিস মশার মাধ্যমে। বর্ষায় বাসাবাড়িতে পানি জমে এই মশার বংশবিস্তার বেশি ঘটে। ২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গুর বড় ধরনের প্রকোপ দেখা দেয়। মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরের বছরগুলোতে এর প্রকোপ খুব বেশি না হলেও ২০১৯ সালে তা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বছর দেশে ডেঙ্গুতে দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু এবং লক্ষাধিক মানুষ এতে আক্রান্ত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে সারা দেশের সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে এ মাসের প্রথম সাত দিনেই ভর্তি হয়েছেন ১১১ জন। এ মাসের শুরু থেকেই দেশে বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ রাজধানী ঢাকার। গতকাল সারা দেশে ৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ৭০ জন ভর্তি ছিলেন রাজধানীর সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে। সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত এই হাসপাতালে ৪৮ জন ডেঙ্গু রোগী ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার প্রাক-বর্ষা মৌসুমের মশা জরিপে গত বছরের তুলনায় এ বছর রাজধানীতে মশা বেশি দেখা গেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদদের একটি অংশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে চলতি বছর আবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে।
গত বছরের সঙ্গে এ বছরের কয়েক মাসের ডেঙ্গু রোগীর পরিসংখ্যান সেই আশঙ্কাকে সমর্থন করছে। গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ১২০ জন। আর এ বছর একই সময়ে রোগীর সংখ্যা ৪৬৩ জন। তবে এ বছর এখনো ডেঙ্গুতে মৃত্যুর কোনো খবর দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।