কেকে’র হৃদপিণ্ডে ৭০ শতাংশ ব্লকেজ ছিল, অতিরিক্ত উত্তেজনায় হঠাৎ কার্ডিয়াক এটাকে মৃত্যু

১৯৯৯ সাল থেকে পরের এক যুগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন উপমহাদেশের তরুণদের অন্যতম পছন্দের শিল্পী। ‘জিন্দেগি দো পল কি’ থেকে ‘খুদা জানে’র মতো অনেক জনপ্রিয় গানের সেই শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে আর নেই। গত মঙ্গলবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়। মাত্র ৫৩ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর।

দুই দিনের গানের অনুষ্ঠানে গাইতে শহরে এসেছিলেন এই শিল্পী। ৩১ মে ছিল অনুষ্ঠানের শেষ দিন। সেদিন সন্ধ্যায় কলকাতায় নজরুল মঞ্চে গান গাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় এক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কী কারণে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর, তা নিয়ে জল্পনা ছিল ভক্তদের ভেতর। অবশেষে জানা গেল কে কের মৃত্যুর কারণ।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাইতে আর নাচতে গিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজনায় তাঁর হার্টের ব্লকেজ বেড়ে গিয়ে আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় রক্ত চলাচল। ফল, কার্ডিয়াক অ্যাটাক। এরপর চিকিৎসা শুরুর আগেই অকালে চলে যেতে হলো গায়ককে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, হার্টের ব্লকেজই কে কের জন্য কাল হয়েছে। হার্টের এই ব্লকেজের কথা কাউকে জানাননি তিনি। এমনকি তাঁর ছায়াসঙ্গী ম্যানেজারকেও না। তবে মুম্বাই থেকে কলকাতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে স্ত্রী জ্যোতিলক্ষ্মী কৃষ্ণাকে বলেছিলেন, ‘শরীরটা ইদানীং ভালো যাচ্ছে না। আয়োজকদের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছি। তাই শেষ মুহূর্তে পারফর্ম না করে পারছি না।’

কে কের স্ত্রী গতকাল কলকাতায় বলেছেন, ‘মুম্বাই ছাড়ার আগে বারবার বলেছিল, শরীরটা ভালো নেই। ব্যথা ছিল হাতে। তখনো আমরা বুঝতে পারিনি, ওর শরীরে বড় কোনো রোগ বাসা বেঁধে আছে। এখন জানতে পারছি, হৃদ্‌রোগের প্রাথমিক উপসর্গস্থল এই হাতে ব্যথা।’

হাসপাতাল সূত্র বলছে, তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রের বাঁ দিকের ধমনিতে ৭০ শতাংশ ব্লকেজ ছিল।কেকে’র ম্যানেজার গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, মঙ্গলবার প্রচণ্ড গরম ছিল নজরুল মঞ্চে। ওকে জল খেতে হচ্ছিল বারবার। তবু টানা দেড় ঘণ্টা হাসিমুখে গেয়েছেন, দর্শকদের আবদার রক্ষা করেছেন।

হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে ভক্তদের সেলফির আবদারও মিটিয়েছেন। অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে হোটেলের ঘরে ফিরে শেষ পর্যন্ত সেই অসুস্থতার পথ ধরে লুটিয়ে পড়েন হোটেলকক্ষে। তারপর হোটেল থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, সব শেষ।

Back to top button