৪ জুন বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে কঠোর বার্তা দিতে পারে

সম্প্রতি ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে রাজপথে উত্তাপ ছড়িয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি লাগাতার কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। আগামী দিনে সরকার পতনের জন্য লাগাতার কর্মসূূচির ঘোষণাও দিচ্ছে।

অন্যদিকে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ইতোমধ্যে পৃথক পৃথক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দকে সতর্ক করেছে। এমনকি আন্দোলনের নামে ‘আপত্তিকর বক্তব্য’, ‘সহিংসতা’ করার দায়ে মামলা করারও ইঙ্গিত দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। আগামী ৪ জুন দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আরও কঠোর বার্তা আসতে পারে বলে জানা গেছে।

গতকাল বিকালে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান জানান, আন্দোলনের নামে বিএনপি সন্ত্রাসী মনোভাব ও কার্যক্রমের প্রতিবাদে ৪ জুন সারাদেশে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। রাজধানীতে বেলা ১১টায় কর্মসূচি শুরু হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের যৌথসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন ঘিরে সারাদেশের মানুষের মনে উৎসব কাজ করছে। সারাদেশেই উৎসব হবে।

এই উৎসবকে ম্লান করতে বিএনপি ছাত্রদলকে দিয়ে রাজপথে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। বিএনপি ছাত্রদলকে ব্যবহার করে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে- কিন্তু সবকিছুর শেষ আছে। বেশি বাড়াবাড়ি ভালো না। রাজপথে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, বিএনপি আন্দোলনের নামে আপত্তিকর বক্তব্য দিলে, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে, সন্ত্রাসী কর্মকা- চালালে সঙ্গে সঙ্গে কর্মসূচি বানচাল করে দিতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করলে বিন্দু পরিমাণ ছাড় না দেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে মামলা করতেও বলা হয়েছে।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, তারা (বিএনপি) আন্দোলন করবেন এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। তারা যুক্তিযুক্ত ও শিষ্টাচারের সঙ্গে সরকারের বিরোধিতা করবেন সেটিও তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।

তারা সেই অধিকারের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবেন। কিন্তু অরাজকতা ও নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা অথবা শিষ্টাচারের সীমানা অতিক্রম করলে যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে ও প্রতিকার করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় সরকার দেখবে, রাজনৈতিক বিষয় আওয়ামী লীগ মোকাবিলা করবে।

ঢাকা বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ এই সেøাগান দিয়ে তারা দেশে আরেকটা ১৫ আগস্ট সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।

যেভাবে তারা ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছে তাতে সবাই ধারণা করছেন যে বিএনপি নেতারা অতীতের পথ ধরেই হাঁটছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের সেই আহ্লাদ পূরণ করতে দেবে না। তাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার জন্য সারাদেশের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত।

খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলে এক কথা। কিন্তু আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কর্মকা- করলে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াবে দেশের জনগণ। বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে রাখা উচিত আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যন্ত সংগঠিত একটি রাজনৈতিক দল। সুতরাং বিএনপি বা অন্য কোনো দল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করলে জনগণের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।

রাজশাহী বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, যারা ৭৫’র হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দেয় তাদের এদেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। ওরা খুনি চক্র, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। স্বাধীন বাংলাদেশে খুনিদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। যারা পঁচাত্তরের কায়দায় আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে হত্যা করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই আইনি এবং রাজনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, বিএনপি আন্দোলনের নামে আপত্তিকর বক্তব্য দিলে, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে, সন্ত্রাসী কর্মকা- চালালে সঙ্গে সঙ্গে কর্মসূচি বানচাল করে দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করলে বিন্দু পরিমাণ ছাড় না দেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে মামলা করতেও বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হাতে তো ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অস্ত্র চলে এসেছে। তারা বলছে ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’। এই স্লোগানের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয় এই অস্ত্র তাদের পকেটে আছে।

এই অস্ত্র দিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি এবং আমাদের আক্রমণ করার ইঙ্গিত দিয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই তাদের আন্দোলন হচ্ছে সহিংস আন্দোলন। অস্ত্র দিয়ে গুলি করে মানুষ মারার আন্দোলন। এই অস্ত্র দিয়ে গ্রেনেড দিয়ে, গুলি করে হামলা করে যারা রাজপথে জনগণের শান্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, শান্তিভঙ্গ করবে সহিংসতা সৃষ্টি করবে অতীতের মতোই তাদের প্রতিহত করা হবে।

Exit mobile version