সাবেক রাষ্ট্রদূতের বাসায় ডাকাতি, ছয়জন গ্রেপ্তার
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁর বাসায় ডাকাতি হয় বলে সাবেক রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেন জানিয়েছেন। তিনি মঙ্গলবার বলেন, ওই রাতে স্ত্রী, সন্তান ও গৃহপরিচারকদের নিয়ে বাসায় অবস্থান করছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে দরজায় কড়া নেড়ে আচমকা ১৪ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি তাঁর শোবার ঘরে ঢুকে পড়েন। চোখের পলকে তাঁরা সবার হাত-পা বেঁধে ফেলেন। ডাকাতেরা তাঁর স্ত্রীর সব স্বর্ণালংকার নিয়ে যান।
সোহরাব হোসেনের ঢাকার ধামরাইয়ের বাসায় ডাকাতির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তাঁরা ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ডাকাতির সঙ্গে জড়িত।
এই ডাকাত দলের তৎপরতা নিয়ে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, তাঁরা অনলাইনভিত্তিক ফুড ডেলিভারিম্যান, রংমিস্ত্রি, মুদিদোকানের কর্মচারী ও সিএনজি অটোরিকশাচালক সেজে ডাকাতির জন্য উপযুক্ত বাসা খুঁজে বের করেন। পরে সুযোগ বুঝে সেখানে ডাকাতি করেন।
ডাকাতির পরদিন ভোরে সোহরাব হোসেন জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। এরপর পুলিশ তাঁর বাসায় যায়। সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই বেনজীর আহমেদ ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য। আমার নিজের একটা পরিচয় আছে। এমন কিছু ঘটবে, কল্পনাও করিনি।’
পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, ডাকাত দলের সদস্যসংখ্যা ১৪ থেকে ১৫। তাঁদের নেতাসহ আরও সাত-আটজন বর্তমানে পলাতক। তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।পুলিশের ভাষ্যমতে, গ্রেপ্তার ছয়জন গত ২৪ এপ্রিল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি বাড়িতেও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। ওই ঘটনায় মামলা করেন ইব্রাহীম মিঞা নামের এক ব্যক্তি। মামলার এজাহারে তিনি লিখেছেন, তাঁদের বাসা থেকে ডাকাতের একটি দল ৭ লাখ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকার সোনা ও রুপার অলংকার ও অন্যান্য জিনিস নিয়ে গেছে।
এই ডাকাতিতে জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। সেখানে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার ছয়জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহরাব হোসেনের বাসায় ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন। সোমবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বছিলার সিটি ডেভেলপারস লিমিটেডের সামনে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. সুজন হাওলাদার, মো. রবিউল আউয়াল রবি, মো. বাবু ওরফে জুয়েল, মো. রনি, মো. একরাম আলী ও মো. ইব্রাহিম মিঝি। তাঁদের কাছ থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, একটি একনলা বন্দুক, একটি চাপাতি, দুটি ছোরা, একটি লোহার রড ও ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।