‘সরকারি গুন্ডা’র ভয় দেখালেন আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ‘সরকারি গুন্ডা’র ভয় দেখালেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনীত একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। জাকের হোসেন চৌধুরী (বাচ্চু) নামের এই ব্যক্তি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জাকের হোসেনের বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে এলাকার পরিস্থিতি নিয়েও নানা কথা বলেছেন তিনি। প্রেমবাজার এলাকা একসময় ডাকাতের অভয়ারণ্য ছিল বলেও বক্তৃতায় উল্লেখ করেন তিনি।

গত রোববার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের প্রেমবাজার এলাকায় এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্যে প্রতিপক্ষকে এই হুমকি দেন জাকের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি দলের লোক, আমার তো সরকারি গুন্ডা আছে। আছে না? লাইসেন্সধারী। এরা কি এনাদের (প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী) কাজ করবে, না আমি নির্দেশ দিলে আমার কাজ করবে?’

পুঁইছড়ি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সুলতানুল গনি চৌধুরী এবার নির্বাচন করছেন না। জাকের হোসেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও দল থেকে দুজন প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা হলেন ফরহাদুল আলম চৌধুরী ও মেহাম্মদ তারেকুর রহমান।

প্রেমবাজার এলাকায় ওই নির্বাচনী সভায় মাইকে বক্তব্য দেন জাকের হোসেন। তাঁর পেছনে নৌকা প্রতীকের ব্যানার ছিল। চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাশে চেয়ারে বসা ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা খোরশেদুল আলম।এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাকের হোসেন চৌধুরী আজ বলেন, সেদিন অনেক কথা বলে ফেলেছেন। যাঁরা ভয় দেখাচ্ছেন, তাঁদের লক্ষ্য করে বলতে চেয়েছেন যে প্রশাসন শক্ত অবস্থান নেবে। কিন্তু হয়তো ‘স্লিপ অব টাং’ হয়ে গেছে। সেটা তিনি খেয়াল করেননি। ভুল হয়েছে এটা।

জাকের হোসেন প্রতিপক্ষের উদ্দেশে বলেন, এখানে যত বড় গুন্ডা হোক, যত বড় পয়সাওয়ালা হোক, একবিন্দু মাত্র বিশৃঙ্খলা করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, ‘এনাদের (প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী) এত হুমকি-ধমকি, ভয়টয় আপনারা করবেন না। আপনারা জানেন, আপনারা ভালোভাবে জানেন। এই এলাকায় একসময় ডাকাতের অভয়ারণ্য ছিল। রাতের বেলায় ডাকাতি করত, দিনের বেলায় বিভিন্ন জায়গায় জুয়া খেলত। আওয়ামী লীগ নামধারী হয়েছিল তারা।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার মো. ফয়সাল আলম আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে, বিষয়টি তাঁদের নজরে এসেছে। এমন বক্তব্য প্রার্থী দিতে পারেন না। এ বিষয়ে তাঁরা ‘অ্যাকশন’-এ যাচ্ছেন।এর আগে এই উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরী ইভিএমের ‘বাটন’ টিপে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে লোক রাখার ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন।

গত শনিবার এক নির্বাচনী সভায় ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে ইভিএম একটা করেছে সরকার। তো কী করতাম। একটু কষ্ট করে গিয়ে আঙুলে চাপ দিয়ে ভোট দিতে হবে। চাপ দিতে না পারলে চাপ দেওয়ার জন্য সেখানে আমি মানুষ রাখব। তো আমাকে একটু দোয়া করবেন সকলে।’

Exit mobile version