ফেসবুকে ‘পাইকারি বাজার’ নামে পেজ খুলে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘পাইকারি বাজার’ নামে একটি পেজ খুলে সেখানে ৫ লিটার সয়াবিন তেল ৭০০ টাকায় সরবরাহ করার অফার দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ছিল বাজারমূল্য থেকে কম দামে ডাল, চিনি, ময়দা ও গুঁড়া দুধ বিক্রির অফার।
আর এভাবে মাত্র দুই মাসে লক্ষ্মীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকার আরশি নগরের বাসিন্দা মো. রবিন বিশ্বাস (২৫)।র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার খন্দকার মো. শামীম হোসেন বলেন, প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে উল্লেখিত ‘পাইকারি বাজার’ ই-কমার্স প্রতারক রবিন বিশ্বাসকে শনাক্ত করেন। এরপর গত রোববার রাত সোয়া ১০টা দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকার সাক্তা ইউনিয়নের আরশিনগর বাজারের একটি দোকান থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত রোববার রাতে র্যাব-১১-এর নোয়াখালী ক্যাম্পের সদস্যদের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন মো. রবিন বিশ্বাস। তিনি বর্তমানে কেরানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা হলেও তাঁর স্থায়ী ঠিকানা সিলেট কোতোয়ালি থানার নয়া সড়ক গ্রামে। গ্রেপ্তার রবিনকে গতকাল সোমবার র্যাব লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানায় সোপর্দ করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ই-কমার্সের মাধ্যমে প্রতারণা করে ভোক্তাদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
র্যাব সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের সময় রবিনের হেফাজত থেকে ই-কমার্স প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত চারটি মুঠোফোন, মুঠোফোনে ব্যবহৃত সিম এবং প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রবিন বিশ্বাস জানান, তিনি গত ৮ মার্চ পাইকারি বাজার নামে ওই ফেসবুক পেজ খোলেন। এরপর সয়াবিন তেলসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য বাজারমূল্য থেকে কম দামে বিক্রির অফার দিয়ে আবু বকর ছিদ্দিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
র্যাব-১১-এর নোয়াখালী কার্যালয়ের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন বলেন, লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু বকর ছিদ্দিক ওরফে আরাফাত (২১) নামের এক ব্যক্তি ১৮ মে র্যাব কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘পাইকারি বাজার’ নামে একটি পেজে ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বাজার মূল্য ৯৫০ টাকার স্থলে ৭০০ টাকায় বিক্রির একটি বিজ্ঞাপন দেখেন। এরপর বিজ্ঞাপনে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে তিনি যোগাযোগ করেন।
আবু বকর ছিদ্দিকের অভিযোগ, মুঠোফোনে তিনি পাইকারি বাজারের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে সয়াবিন তেল, মসুর, ডাল, চিনি, ময়দা ও গুঁড়া দুধের অর্ডার বাবদ অগ্রিম ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা দুইটি নগদ হিসাব নম্বরে প্রেরণ করেন।এরপর এক সপ্তাহ পার হলেও ফেসবুকে বিজ্ঞাপনদাতা দ্রব্য সরবরাহ না করে টালবাহানা করতে থাকেন। মুঠোফোনে কথাবার্তার একপর্যায়ে বিজ্ঞাপনদাতা তাঁকে দ্রব্য বা টাকা কোনোটাই দেবেন না বলে জানান।