মামলা তদন্ত করতে এসে বাদীর মেয়েকে ধর্ষণ করেছে গাইবান্ধার ফুলছড়ি থানার এসআই শামসুল হক। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। এখন পুলিশের হুমকিতে ভুক্তভোগী ওই নারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শনিবার ওই ধর্ষিতা গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলে ধরে ধর্ষক পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেছেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে রংপুরের মিঠাপুকুর থানায় কর্মরত ।
ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ধর্ষক এসআই শামসুল হক ফুলছড়ি থানা থেকে বদলি নিয়ে রংপুরের মিঠাপুকুর থানায় যোগ দেন। থানায় কোনো প্রতিকার না পেয়ে ভুক্তভোগী নারী গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করেন।
দীর্ঘদিনেও ধর্ষক পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল হকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ধর্ষিত নারী গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। সাংবাদিকদের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন ধর্ষণের দ্রুত বিচার না পেলে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হবেন। এব্যাপারে ফুলছড়ি থানার ওসি কাওসার আহম্মেদ জানান, ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবহিত নন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী অভিযোগ করেন, তার বিধবা মা ২০২১ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর জমিজমা নিয়ে ফুলছড়ি থানায় ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে ২৪শে অক্টোবর রাতে মামলার তদন্ত করতে আসেন ফুলছড়ি থানার এসআই শামসুল হক।
চরাঞ্চলের নিধুয়া পাথারের মধ্যে বাদীর বাড়িতে ঢুকে ঘর থেকে তার মা ও ছোট ভাইকে বের করে দিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে কু-প্রস্তাব দেন। এক পর্যায়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরদিন ভুক্তভোগী নারী থানায় গিয়ে ওসিকে ঘটনাটি অবগত করেন। কিন্তু ওসি কাওসার আহম্মেদ তাদের অভিযোগের কোনো সুরাহা না করে থানা থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনার পর ১১ই ডিসেম্বর তদন্তের কথা বলে এসআই শামসুল হক ভুক্তভোগী নারীকে বালাসীঘাটে ডাকেন। সেখানে তার খালার বাড়িতে আবারো ধর্ষণ করেন। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে চলতি বছরের ২৫শে জানুয়ারি ওষুধ প্রয়োগে তার আড়াই মাসের বাচ্চা নষ্ট করেন এসআই শামসুল। এতে ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনার পর গত ৯ই জানুয়ারি গাইবান্ধা পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করেন।