ম্যারাডোনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উড়ন্ত জাদুঘর, ২৫ মে উন্মুক্ত

কিংবদন্তির মৃত্যুর দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তাঁকে অর্ঘ্য দেওয়ার পালা শেষ হচ্ছে না। এবার একটি বিমান বানানো হলো ডিয়েগো ম্যারাডোনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে। মে বিপ্লবে স্মরণীয় আর্জেন্টিনার জাতীয় দিবস ২৫ মে বিমানটি উন্মুক্ত করা হবে।

ট্যাঙ্গো ডি১০এস মডেলের বিমানটি বানিয়েছে ব্যবসায়ী ‘গিভ অ্যান্ড গেট’ গ্রুপ। বুয়েনস এইরেসের মোরন বিমানবন্দরে ২৫ মে এই বিমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করার অনুষ্ঠানে ’৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তির পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত থাকবেন।উপস্থাপক হিসেবে থাকবেন আর্জেন্টিনার সাবেক লেফটব্যাক হুয়ান পাবলো সোরিন এবং সংবাদকর্মী ও মডেল অগাস্তিনা কাসানোভা।

এটি একটি উড়ন্ত জাদুঘর, যেখানে ম্যারাডোনার ব্যবহার করা জার্সি ও বুট দেখানো হবে। বিশ্বের নানা প্রান্ত ঘোরার পর নভেম্বরে কাতারে অবতরণ করবে, সে সময়ই যে শুরু হবে ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ম্যারাডোনাকে নিয়ে বানানো গান ‘ফরেভার ডিয়েগো’ গাইবেন আর্জেন্টিনার খ্যাতিমান গায়ক ও গীতিকার হুয়ান সেবাস্তিয়ান গুতিরেজ। জনপ্রিয় গায়িকা ও অভিনেত্রী ভ্যালেরিয়া লিঞ্চও পারফর্ম করবেন ম্যারাডোনাকে নিয়ে সাজানো এ অনুষ্ঠানে।

বিমানটির ভেতরে ও বাইরে নকশা করেছেন প্লাস্টিক শিল্পী ম্যাক্সিমিলিয়ানো বাগনাসকো। ম্যারাডোনার হাতে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ, তাঁর বিখ্যাত ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের মুহূর্ত এবং সইয়ের ছাপ রয়েছে বিমানের বাইরের অংশে। আরেকটি মজার বিষয়, বিমানে ভ্রমণ করার সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় ম্যারাডোনার সঙ্গে অডিও ও ভিডিওতে নানা প্রশ্ন করতে পারবেন যাত্রীরা। ম্যারাডোনা সেসব প্রশ্নের উত্তরও দেবেন!

আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘ইনফোবে’ জানিয়েছে, এই বিমানে ভ্রমণকারীরা অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাবেন। ম্যারাডোনার খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের জার্সি ও বুট তো দেখার সুযোগ পাবেনই, এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত বার্তা রেকর্ড করে রেখে আসতে পারবেন কিংবদন্তির জন্য। ‘স্বর্গে থাকা’ ম্যারাডোনার কাছে তা পাঠিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।

বিমানটি তৈরিসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে ইনফোবে, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটা নিয়ে কাজ করছি। ডিয়েগোর প্রতি এই ক্ষুদ্র অর্ঘ্যটুকু আমরা দিতে চাই। সবাই এই বিমানের ভেতর ঢুকে সবকিছু দেখতে পারবেন। জুলাইয়ে তা সারা দেশে (আর্জেন্টিনা) ঘুরবে।

প্রাথমিক পরিকল্পনা হলো, জুলাইয়ে এই বিমান উড়াল দেওয়ার পর ম্যারাডোনার ’৮৬ বিশ্বকাপের কিছু সতীর্থকে নিয়ে কাতার বিশ্বকাপের পথে রওনা হবে। তবে এর আগে বিমানটি বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘুরবে এবং যাত্রীদের সই সংগ্রহ করবে।সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার ম্যারাডোনা ২০২০ সালের নভেম্বরে মারা যান। এর পর থেকেই বিশ্বের নানা প্রান্তে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো থেমে নেই। 

ম্যারাডোনা ইতালির ক্লাব নাপোলিকে বিশ্বমানের দলে পরিণত করেছিলেন, সেখানকার শহর নেপলসের অধিবাসীরা কিংবদন্তিকে ‘ঈশ্বরতুল্য’ মর্যাদা দেন। মেক্সিকোয় ম্যারাডোনার নামে নতুন গির্জাও খোলা হয়েছে। নেপলসে ম্যারাডোনার নামে গির্জা তো আছেই, কিছুদিন আগে সেখানকার শহর স্কাম্পিয়ায় নতুন এক ভাস্কর্য বসানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ম্যারাডোনার বাঁ পায়ের এই ভাস্কর্য তৈরি করবেন ভাস্কর স্টেফানো চেচি।

Back to top button