ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমানের শিশুপুত্র আল রাফসানকে কুপিয়ে হত্যা ও স্ত্রী দিলজাহান বেগমকে জখম করার ঘটনায় অভিযুক্ত এরশাদ মোল্লা (৩৫) একটি মুঠোফোন কোম্পানির টাওয়ার থেকে লাফ দিয়ে মারা গেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার আটরশি এলাকার একটি টাওয়ার থেকে তিনি ঝাঁপ দেন।
আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে উপজেলার পোস্ট অফিসের সামনে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে ঢুকে এরশাদ মোল্লা প্রথমে রাফসানকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তখন ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান বেগম (৩৫) এগিয়ে এলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, চাপাতি দিয়ে এরশাদ মোল্লা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি ঢেউখালী ইউনিয়নের ঢেউখালী মোল্লাবাড়ির বাসিন্দা। সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ–সংক্রান্ত একটি সালিসের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ হয় একটি পক্ষ। এর জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।
চেয়ারম্যানের শিশুপুত্র হত্যার পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে পাশের ভাঙ্গা উপজেলার বালিয়াহাটি বাজার এলাকায় গণপিটুনির শিকার হন এরশাদের ভাই ইমরান মোল্লা (২৯)। পুলিশ তাঁকে উদ্ধারের পর আটক করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
এরশাদ ও ইমরান উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের সানু মোল্লার ছেলে। এরশাদ দুই সন্তানের বাবা। তাঁর স্ত্রীর নাম রাহিমুন। এরশাদ সম্প্রতি স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার উদ্যোগ নেন। এ নিয়ে উপজেলা পরিষদে গত সোমবার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সিকদারের মধ্যস্থতায় সালিস বৈঠক হয়।
বৈঠকে ঢেউখালী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তিনি সালিসে এরশাদকে তালাক দেওয়া থেকে বিরত থাকার প্রস্তাব দেন। কিন্তু এরশাদ প্রস্তাব নাকচ করলে আজকের (বুধবার) মধ্যে তাঁর স্ত্রীকে দেনমোহর বাবদ তিন লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সিকদার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এলাকার বাসিন্দারা আল রাফসান ও দিলজাহান বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আল রাফসানকে মৃত ঘোষণা করেন। দিলজাহানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে প্রথমে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।