মাদারীপুরে শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে দুই ব্যবসায়ীকে কোপানোয় ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।এই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় নোবেল বেপারীসহ ২৫ জনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা করেছে আহত অহিদের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সুমা। এদিকে মামলা হলেও আসামি গ্রেফতার হয়নি।
আহতরা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের মহিষেরচর এলাকার সাঈদ হাওলাদারের ছেলে অহিদ হাওলাদার (৩২) ও একই এলাকার এসকেনদার আলী সরদারের ছেলে কামাল সরদার (৪৫)।প্রত্যক্ষদর্শী ও ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে স্থানীয়রা জানান, শহরের বটতলা এলাকার নোবেল বেপারী ও তার সঙ্গীরা এসে এ হামলা চালিয়েছে।
মামলার বিবরণ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকালে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন ব্যবসায়ী অহিদ ও কামাল। এ সময় ১০ থেকে ২৫ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। অহিদ ও কামালকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে নোবেল ও তার সহযোগীরা।
আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর অবস্থায় আহত দু’জনকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে অহিদ হাওলাদারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করেছেন চিকিৎসক।
আহত অহিদ হাওলাদারের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সুমা বলেন, নোবেল মাদারীপুর শহরের কিছু কিশোরদের নিয়ে একটি গ্যাং তৈরি করেছে। এই গ্যাং এর মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধ করে নোবেল। প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়তই অপকর্ম ঘটিয়ে যাচ্ছে। এ বাহিনীর বিভিন্ন সদস্যের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
আহত কামাল সরদারের ভাই ইমরান সরদার বলেন, শহরের বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত নোবেল বাহিনী। নেতাদের আশ্রয়ে থাকার কারণে সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করতে পারে না। আমার ভাইকে কেন কোপালো? আমি সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘তামিল সিনেমার স্টাইলে অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আসে সন্ত্রাসী বাহিনী। এসেই এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। এ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে।’মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সাথে কথা বলেছি। মামলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু সফর হাওলাদার জানান, আহত দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কামালকে ভর্তি রাখা হয়েছে। এছাড়াও অহিদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের বেশ চিহ্ন রয়েছে।