কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন জর্ডান প্রবাসী নারী
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নে কুয়েত প্রবাসী হাসানের (৩০) বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন পিরোজপুর জেলার পাড়েরহাট এলাকার জর্ডান প্রবাসী সোনিয়া (৩৪) নামের এক নারী।
জানা যায়, হাসান দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কুয়েতে অবস্থান করছেন। আর অনশনরত প্রবাসী সোনিয়া গত বছর জর্ডান থেকে দেশে ফিরেছেন। সোনিয়া জানান, ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে কুয়েত প্রবাসী হাসান নামের এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সোনিয়ার অভিযোগ, বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার সর্বস্ব ভোগ করেছেন হাসান। গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে হাসানের বাড়িতে অবস্থান নেন সোনিয়া। বিয়ের আশ্বাস দেয়ায় হাসানকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দিয়েছেন ওই নারী। সোনিয়ার অভিযোগ, হাসান বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার সর্বস্ব ভোগ করেছে।
গত রমজান মাসে বিয়ের জন্য ওই নারী দেশে ফিরলেও হাসান এখনো প্রবাসে রয়েছেন। একপর্যায়ে হাসান সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তাই বাধ্য হয়ে তার বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানান ওই নারী।
সোনিয়া আরও জানান, ঈদুল ফিতরের দুইদিন পর থেকে হাসান মোবাইল বন্ধ করে নাম্বার ব্লাকলিস্টে রেখে দেয়। যোগাযোগ করতে না পেরে হাসানের বাড়িতে এসেছি। বিয়ে না করা পর্যন্ত এই বাড়ি থেকে কোথাও যাবো না।
অপরদিকে হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে হাসান বলেন, সোনিয়ার সঙ্গে ১৫ দিনের সম্পর্ক, বিশ্বাস করে শুধুমাত্র কথা বলেছি। এই সুযোগে কথা বলার স্ক্রিনশট নিয়ে ব্লাকমেইল করতে শুরু করে সোনিয়া। ঈদে পাঁচ হাজার টাকাও দিয়েছি, এছাড়া আর কিছুই না।
হাসানের মা ফাতিমা বেগম বলেন, হাসানের কোনো প্রেমের সম্পর্কের কথা জানি না। তার সঙ্গে কথা বলে পারিবারিকভাবে সমাধান করা হবে। এর জন্য ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের বরগুনায় নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
সোনিয়ার অভিযোগ, হাসান বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার সর্বস্ব ভোগ করেছে। তাদের মধ্যে সামনাসামনি দেখা হয়নি তবে অনাগত সন্তানদের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলে এবং জমি ক্রয়ের কথা বলে ৪ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছেন।
কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম নাসির জানান, ব্যস্ততার কারণে হাসানের বাড়িতে যেতে পারেননি তিনি। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি না করতে পারলে পরে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি আবুল বাশার জানান, অনশনের ঘটনা জানতে পেরে সোনিয়া নামের ওই নারীকে আইনি সহায়তা দিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি আইনগত কোনো সহায়তা না নিয়ে অবৈধভাবে অন্যের বাড়িতে প্রবেশ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করেছেন।