বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতে চলতি বছর সামাজিক অস্থিরতার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। ইংল্যান্ড ভিত্তিক একটি বৈশ্বিক ঝুঁকি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে তারা বলেছে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের ওপরই চাপ বাড়ছে। এক্ষেত্রে মধ্য আয়ের দেশগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের সূচকে উচ্চ ঝুঁকি বা চরম ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই বিশ্ব ব্যাংকের নিম্ন মধ্যম বা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের তালিকাভুক্ত।
১৩২টি দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগামী ছয় মাসের নাগরিক অস্থিরতা সূচক (সিভিল আনরেস্ট ইনডেক্স) প্রকাশ করেছে বৈশ্বিক ঝুঁকি এবং কৌশলগত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভেরিস্ক ম্যাপলক্রফট।এরই মধ্যে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জনরোষের মুখে শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীসভার অধিকাংশ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। কয়েক মাস আগে কাজাখস্তানেও দেখা দেয় অস্থিরতা।
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। বাড়ছে জ্বালানির দামও । এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়ছে আমদানি নির্ভর দেশগুলো। ম্যাপলক্রফট বলছে, এই মুহূর্তে কোন সমাধান না থাকায়, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির এই সংকট ২০২৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
ম্যাপলক্রফট বলছে, চলতি বছর এমন অস্থিরতার ঝুঁকি আছে অন্য উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতেও। এক্ষেত্রে যে ১০টি দেশকে আলাদাভাবে নজরে রাখার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো: আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, মিশর, টিউনিসিয়া, লেবানন, সেনেগাল, কেনিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ফিলিপাইন্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির সময়ে এই দেশগুলো তাদের জনগণের সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রায় ব্যয় বহন করতে গিয়ে তারা এখন হিমশিম খাচ্ছে। খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এশিয়ার দেশগুলোর জন্য অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
ম্যাপলক্রফট বলছে, নাগরিক অস্থিরতা দেশগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাধা তৈরি করে। এছাড়া ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীরা এই দেশগুলোতে বিনিয়োগ করবেন কিনা সেটিও অনিশ্চিয়তার মুখে পড়তে পারে।