অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার ছয় নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এ আদেশ দেন।
জানা যায়, সম্রাটের বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা চারটি হলো- অস্ত্র, মাদক, অর্থপাচার এবং দুদকের দায়ের করা মামলা। বর্তমান সব মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল একই আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সম্রাটের পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম দুলাল, হাবিবুর রহমানসহ প্রমুখ। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সম্রাটের ১০ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিনের আদেশ দেন। এই মামলায় জামিন হওয়াতে সম্রাটের কারামুক্তি পেতে আর কোনো বাধা থাকলো না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
সম্রাটের পক্ষের মো. হাবিবুর রহমান জানান, তিন শর্তে সম্রাটের দুদুকের মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শর্তগুলো হচ্ছে- অসুস্থতা বিবেচনায়, বিদেশে যাওয়া না শর্তে এবং প্রতিটি ধার্য তারিখে হাজিরা শর্তে জামিন দিয়েছেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন।
অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
গত ২২ মার্চ দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ ধার্য করে মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৬ এ পাঠানো হয়। আগামিকাল বুধবার মামলাটি চার্জশুনানির জন্য ধার্য রয়েছে।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।উল্লেখ্য, ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।