তালতলা বাজারে তেল কিনতে আসা শাহাজাহান মিয়া কোথাও সয়াবিন তেল না পেয়ে ১৯৫ টাকা দিয়ে পাম অয়েল কিনেছেন। তিনি বলেন, কোনো দোকানে সয়াবিন তেল পেলাম না। ১৪০ টাকার পাম তেল কিনতে হচ্ছে ১৯৫ টাকা দিয়ে। আমাদের আর বাঁচার জো নেই। একেকটা জিনিসের দাম বাড়ে, আর আমাদের কাছে তা পাহাড়ের মতো মনে হয়।
তিনি বলেন, সরিষার তেলের দামও বেড়েছে। খোলা সরিষার তেল ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বোতলজাত সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন বাজারে সয়াবিন তেল না থাকায় সরিষার তেলের উপর প্রভাব পড়েছে। এ জন্য কিছুদিন আগে এই তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে।
বাজারের কোনো দোকান বাকি রাখি নাই। কোথাও সয়াবিন তেল নাই। দু-একটি দোকানে পাঁচ লিটারের তেল পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু অনেক দাম চাইছে। এত টাকা দিয়ে আমাদের পক্ষে তেল কেনা সম্ভব নয়। এ জন্য বাধ্য হয়ে ১৬০ টাকা দিয়ে ৫০০ গ্রাম সরিষার তেল কিনলাম। এটা দিয়ে কয়েকদিন চালাতে হবে।
এরইমধ্যে সরিষার তেলের দামও বেড়ে গেছে। এক লিটার রাঁধুনী সরিষার তেল কিনতে হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। খোলা সরিষার তেলের দাম নেয়া হচ্ছে ২৮০ টাকা। এমনটাই বলছিলেন রাজধানীর বিএনপি বাজারে তেল কিনতে আসা মাহমুদা আক্তার।
মাহমুদা বলেন, জিনিসপত্রের দামের কারণে এমনিতেই সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে এর মধ্যে তেলের দাম আবারো বাড়লো। দাম বাড়লেও বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো সবকিছু করে যাচ্ছে। বেশি দাম পাওয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা দোকানের গোডাউনে মজুত রাখছে বলে জানান তিনি।
যখন ১৬০ টাকা লিটার ছিল, তখনই সয়াবিন তেল কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিলেন কাশেম। এখন আবার লিটারপ্রতি ৩৮ টাকা দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন তিনি। কাশেম বলেন, তেলের দাম যখন ১৬০ টাকা লিটার, তখনই কেনা কমাইছি। এখন আবার ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এত টাকা দিয়া তেল কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। আগের ৪ লিটার তেলের দাম এখন ২ লিটারের সমান। প্রতি মাসে মাসে তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। কারও যেন কিছু করার নেই। তিনি বলেন, এত দাম বাড়ানোর পরও বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না।
সয়াবিন তেলের ডিলার সাত্তার বলেন, কোম্পানি থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আমার কাছে কোনো তেল নেই। অনেকে তেল চাচ্ছে, কিন্তু দিতে পারছি না। কাস্টমাররা ঘুরে যাচ্ছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যে তেলের সংকট কেটে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, গত এক মাস ধরে বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। কোম্পানি থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। পাম অয়েলও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ১৯৫ টাকা লিটার পাম তেল বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সয়াবিনের প্রভাব কিছুটা হলেও সরিষার তেলে এর প্রভাব পড়েছে। দাম বেশি হলেও অনেকে সরিষার তেল কিনছে। কারণ এক লিটার বা ৫০০ গ্রাম সয়াবিন তেল পাওয়া না গেলেও সরিষার তেল পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, দু’-একদিনের মধ্যেই বাজারে সয়াবিন তেল আসবে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
সরিষার তেলের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, সয়াবিন তেলের প্রভাব কিছুটা সরিষার তেলের উপর পড়েছে। কেননা বাজারে সয়াবিন তেল নেই। ঈদের আগে থেকেই সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। এ জন্য বিকল্প হিসেবে অনেকে সরিষার তেল কিনছে।
সরিষার তেলের দাম এখন বাড়ানো হয়নি। মাসখানেক আগেই বেড়েছিল। এক লিটার রাঁধুনী সরিষার তেলের দাম ৩৫০ টাকা। ৫০০ গ্রামের দাম ১৬০ টাকা। অন্যদিকে খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে২৬০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত।