যাত্রী কম থাকায় রাজধানীর সদরঘাট থেকে আজ শুক্রবার রাতে বেশির ভাগ গন্তব্যের উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। ফলে অনেক যাত্রীকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘাটের পন্টুনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। যাত্রীরা অনুরোধ করলে লঞ্চের কর্মচারীরা জানান, যাত্রী না হওয়ায় তাঁরা সকালে ছেড়ে যাবেন। তবে রাত ১১টা পর্যন্ত বরিশালগামী লঞ্চের বেশির ভাগ ছেড়ে গেছে।
রাত পৌনে আটটার সময় হাতিয়ার যাত্রী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। বিকেল পাঁচটা থেকে তিনি লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। গাজীপুরের চন্দ্রায় নিজের ব্যবসা করেন রফিকুল। গন্তব্যের লঞ্চ না পাওয়া আরও ১৩ জন যাত্রীর সঙ্গে ঘাটেই অপেক্ষা করছিলেন তিনি। রফিকুল ইসলাম বলেন, বিআইডব্লিউটিএ সঠিক ব্যবস্থাপনা করলে নির্দিষ্ট সময় পরপর লঞ্চ থাকত।
এদিকে দেশের ১৬টি জেলায় কালবৈশাখী ধেয়ে আসছে। এরই মধ্যে আটটি জেলায় কালবৈশাখী ও দমকা বাতাস শুরু হয়েছে। আজ রাতের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের উত্তরাঞ্চল, ময়মনসিংহ বিভাগ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে ওই ঝড় শুরু হতে পারে। এ সময় দেশের নয়টি জেলার নদীবন্দরগুলোর জন্য ২ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
হাতিয়া সরকারি দ্বীপ কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র মো. লিটনও হাতিয়ার লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন ঘাটে হাতিয়াগামী এমভি ফারহান-৩ ভেড়ানো ছিল। এ সময় ভোলার লালমোহন, চরফ্যাশনের আয়েশাবাগ, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের পন্টুনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। পন্টুনের ওপর বিছানার চাদর বিছিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাঁদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
পটুয়াখালীর গলাচিপার যাত্রী আরিফ হোসেন মিরপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে অন্য আটজনের সঙ্গে ঘাটে আসেন তিনি। এসে এ গন্তব্যের কোনো লঞ্চ পাননি। এখন ঘাটে বসেই সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
তবে বরিশালগামী লঞ্চ ছেড়ে গেছে রাত নয়টা পর্যন্ত। রাত আটটার দিকে সদরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, বরিশালগামী বেশির ভাগ লঞ্চের ডেকে যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অনেক লঞ্চের ছাদেও যাত্রীদের উঠতে দেখা গেছে। বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এ সময় বারবার লঞ্চগুলোকে ছাদে থাকা যাত্রীদের নামিয়ে দিতে মাইকে অনুরোধ করতে দেখা গেছে।
আটটার দিকে ভোলাগামী এমভি ভোলা লঞ্চে যাত্রী ওঠানো হচ্ছিল। যাত্রীতে পরিপূর্ণ থাকলেও যাত্রী কম বললেন লঞ্চের ম্যানেজার মো. ইকবাল হোসেন। সাড়ে আটটার দিকে এটি ছেড়ে যায়।ভোলাগামী কর্ণফুলী-৯, এমভি বালিয়া ঘাটে ভেড়ানো ছিল। এসব লঞ্চ সকালে ছেড়ে যাবে বলে কর্মচারীরা জানিয়েছেন।ঢাকা-আয়েশাবাগগামী কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চটি ঘাটে ফিরে এলেও আর ছেড়ে যায়নি। যাত্রীরা উঠতে চাইলে কর্মচারীরা জানান, যাত্রী হলে সকালে ছেড়ে যাবেন তাঁরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)র ঢাকা নদী বন্দর কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বলেন, কালবৈশাখীসহ যেকোন ধরনের ঝড় হলে লঞ্চকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে লঞ্চচালকদের বলা আছে। তবে লঞ্চ চলাচল বন্ধের বিষয়ে তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরবিহন সংস্থার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবুল কালাম খান বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব লঞ্চ যাত্রাপথে আছে সেগুলো থেকে ঝড়ের বিষয়ে কোনো খবর আসেনি।