আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঢাকা কলেজের একটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে এক ছাত্রলীগ নেতাকে ধরে নিয়ে গেছেন বলে কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন। তাঁদের দেওয়া তথ্য মতে, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র্যাবের একটি দল আজ রোববার ইফতারের আগ মুহূর্তে কলেজের ‘আন্তর্জাতিক’ ছাত্রাবাসের ১০১ নম্বর কক্ষে অভিযান চালান। গত মঙ্গলবার নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে নাহিদ হোসেন নামে এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যায় জড়িত এক সন্দেহভাজন ছাত্রাবাসের ওই কক্ষে থাকতেন।
এই অভিযানের পর ঢাকা কলেজের অন্যান্য হল ফাঁকা হয়ে গেছে বলে নর্থ হলের ওই ছাত্র জানিয়েছেন।তবে এই অভিযান ও আটকের কথা স্বীকার করেনি পুলিশ। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেছেন, ‘আমাদের কোনো টিম ঢাকা কলেজে যায়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি।’
ঢাকা কলেজের একজন ছাত্র বলেন, ডিবি ও র্যাব সদস্যরা আন্তর্জাতিক হল থেকে জহির হাসান ওরফে জুয়েল নামে একজনকে ধরে নিয়ে গেছেন। জহির হাসান ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ছিলেন। ওই কক্ষ থেকে দুটো মুঠোফোনও জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকা কলেজের ওই ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি শুনেছেন যে ছাত্রাবাসে র্যাব ও ডিবির সদস্যরা এসেছিলেন। তাঁরা দুটো মুঠোফোন জব্দ করেছেন। তবে কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। তাঁর ধারণা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওই সদস্যরা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসে থাকতে পারেন।
গত সোমবার মধ্যরাতে নিউমার্কেটের দোকান মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। এর জের ধরে পরদিন মঙ্গলবারও দিনভর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষের মধ্যে আহত হয়ে মারা গেছেন দুজন। তাঁদের একজন একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
সেখানে হেলমেট অস্ত্রধারীদের হামলায় অংশ নিতে দেখা গেছে।এই অস্ত্রধারীদের কয়েকজনকে এরইমধ্যে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।এ বিষয়ে জানতে ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস সিকদার বলেন, কলেজের কোনো ছাত্র যদি সত্যিকার অর্থেই অপরাধী হয়ে থাকে, তাহলে সেখানে কলেজ প্রশাসনের বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কিছু নেই। আইন নিজের গতিতে চলবে।