রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে নারীদের ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিয়েভ এবং তার আশপাশের এলাকা থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করা হলেও তারা গভীরভাবে আহত যেসব জীবন রেখে গেছেন, সেই মানুষগুলো হয়তো কখনোই ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না।
কিয়েভ থেকে ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে আন্না নামে ৫০ বছর বয়সী এক নারীর সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তারা ওই নারীর প্রকৃত পরিচয় গোপন করতেই নাম ছদ্মনাম ব্যবহার করেছে।আন্না বলেছেন, গত ৭ মার্চ তিনি ও তার স্বামী বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সে সময় একজন বিদেশি সেনা তাদের বাড়িতে ঢোকেন।
আন্না তার ধর্ষণকারী সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, সেই সেনা ছিলেন তরুণ এবং হালকা-পাতলা গড়নের। ওই সেনা চেচেন যোদ্ধা, যারা রাশিয়ার সঙ্গে জোটবদ্ধ।‘বন্দুকের মুখে ওই সেনা আমাকে বাড়ির পাশেই একটি জায়গায় নিয়ে যান। তিনি আমাকে পোশাক খুলতে বলেন, অন্যথায় গুলি করার হুমকি দেন। তার কথা মতো কাজ না করলে আমাকে হত্যার হুমকি দিতে থাকেন। তারপর তিনি আমাকে ধর্ষণ করতে শুরু করেন’- বলেন আন্না।
তিনি বলেন, ‘যখন তিনি আমাকে ধর্ষণ করছিলেন, তখন আরও চারজন সেনা ঢুকে পড়ল। তখন আমি ভেবেছিলাম আজই আমার শেষ দিন। কিন্তু তারা এসে তাকে দূরে নিয়ে যায়। আমি আর কখনোই তাকে দেখিনি।’ তিনি বিশ্বাস করেন রুশ সেনাদের পৃথক একটি ইউনিট তাকে রক্ষা করেছে। পরে তিনি বাড়ি ফিরে তার স্বামীকে আহত অবস্থায় পান। তাকে পেটে গুলি করা হয়েছিল।
আন্না যখন বিবিসিকে তার ভয়ঙ্কর স্মৃতির কথা জানাচ্ছিলেন তখন তার কান্না থামছিল না। প্রতিবেশীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির উঠোনে যেখানে স্বামীকে সমাধিস্থ করেছেন সেই জায়গাও দেখান তিনি। আন্না জানিয়েছেন, এসব ঘটনার পর তিনি স্থানীয় হাসপাতালে যোগাযোগ করে মানসিক বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।
‘তিনি আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাকে গুলি করা হয়’-বলেন আন্না। তিনি জানান, তারা প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা কেউই তার স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি, যুদ্ধের কারণে। আহত হওয়ার দুদিন পর তার স্বামীর মৃত্যু হয়।