অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটে হেরে যাওয়ার আগমুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছেড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আজ রোববার ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা এমনটি জানান।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ত্যাগ করেন ইমরান খান। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছেড়ে বানিগালায় তার বাসভবনে উঠেছেন।
শনিবার ১৩ ঘণ্টার বহু নাটকীয়তায় একতরফা অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীত্ব হারান ইমরান। ভোটের পর অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ইমরান খানকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারণ করা হয়।পিটিআইর সিনেটর ফয়সাল জাভেদ খান একটি টুইট বার্তায় বলেন, ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর হাউস থেকে বিদায় জানিয়েছেন। তিনি সদয়ভাবে বেরিয়ে গেলেন এবং মাথা নত করলেন না।
কয়েক দফা মুলতবির পর দেশটির স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তানের সংসদ অধিবেশন অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট। ভোটাভুটি শেষে প্যানেল স্পিকার পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) নেতা আয়াজ সাদিক এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টাতেই বসে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের অধিবেশন। কিছুক্ষণ না যেতেই দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তা মুলতবি করা হয়। পুনরায় অধিবেশন বসতে না বসতে আবারও মুলতবি।
এভাবে তিন দফা মুলতবি শেষে ইফতারের পর অধিবেশন শুরু হয়। তবে এবারও ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির ঘোষণা এলো না। আবার বিরতি। এরপর ভোটাভুটি শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে নিজেদের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন পাকিস্তানের স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। এরপর প্যানেল স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনাস্থা ভোট শুরু হয়।
আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।