তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পতনের সন্নিকটে শ্রীলংকা সরকার
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে মঙ্গলবার পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। গোটাবায়ার নিজ দলের অনেক আইনপ্রণেতার পাশাপাশি মিত্র দলগুলোর আইনপ্রণেতারা তাঁদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে এ অবস্থায় সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করবেন কিনা, তাত্ক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জন অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে গোটাবায়ার সাবেক মিত্র দলগুলোর নেতারাও তাঁকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্টের দল শ্রীলঙ্কা পোডুজানা পার্টির (এসএলপিপি) ১৬ জন আইনপ্রণেতাসহ মিত্র দলগুলোর বেশ কয়েকজন এমপি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পর পার্লামেন্টে প্রথম অধিবেশন বসে। ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে সরকারের এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে পাঁচটি আসন কম রয়েছে। সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে আইনপ্রণেতারা এখন অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার চেষ্টা করবেন কিনা, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। পাহাড় সমান বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য আমদানি সীমিত করায় বেড়ে গেছে জ্বালানি ও খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম। তা জন্ম দিয়েছে তীব্র গণবিক্ষোভের যা টলিয়ে দিচ্ছে সরকারকে।
বিরোধী দলগুলো ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের নেতৃত্বে একটি ঐক্য সরকারে যোগদানের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে।বিক্ষোভ দমনের জন্য শ্রীলঙ্কার সরকার গত সপ্তাহে জরুরি অবস্থা জারি করে। পার্লামেন্টে নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত না নিলে আগামী সপ্তাহে এর মেয়াদ শেষ হবে।
আজ পার্লামেন্টে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার বিষয়ে ভোটের দাবি জানান বিরোধী দলগুলোর আইনপ্রণেতারা। তা নাকচ করে দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অধিবেশন মূলতবি করা হয়।গণঅসন্তোষের মুখে একের পর শীর্ষ নেতা ও কর্মকর্তা পদত্যাগ করায় চরম বিপাকে পড়েছে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের এক সময়ের প্রভাবশালী ক্ষমতাসীন জোট। দায়িত্ব নেওয়ার একদিন পরই মঙ্গলবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী। তার আগের দিন সরে দাঁড়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।
রাজাপাকসে সোমবার তার মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়েছিলেন এবং একটি ঐক্য সরকার গঠনের চেষ্টা করেছিলেন কারণ শাসক পরিবারের ঋণ-ভারী অর্থনীতি পরিচালনার জন্য জনগণের অস্থিরতা বেড়েছে যা খাদ্য ও জ্বালানীর ঘাটতি এবং দীর্ঘায়িত বিদ্যুতের ঘাটতির কারণ হয়েছে।ডাক্তারদের একটি সংস্থা সরকারকে বলেছে যে ওষুধের তীব্র ঘাটতি রয়েছে যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলতে পারে।