সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ৯ ধরনের আলামতের ডিএনএ টেস্টে পাওয়া গেছে তাৎপর্যপূর্ণ ফল
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ৯ ধরনের আলামতের ডিএনএ টেস্টে পাওয়া গেছে তাৎপর্যপূর্ণ ফল। এতে মিলেছে ২৫ জনের ছাপ। তাদের তদন্তের আওতায় এনেছে র্যাব। তাদের সঙ্গে সাগর-রুনির সম্পর্ক কী ছিল বা কোনো ঘটনার বিরোধের জের ধরে তাদের হত্যা করা হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর রাজাবাজারের নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি দম্পতি। এ ঘটনায় রুনির ছোট ভাই নওশের রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। ওই বছরের ১৬ই ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। তবে এর দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র্যাবকে। সেই থেকে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো চার্জশিট দাখিল করা হয়নি।
খুনের সঙ্গে জড়িত হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে অবশ্য ওই ২৫ জনের কাউকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে না। যে সব বিষয়গুলো ডিএনএ করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে একটি ছুরি, একটি ছুরির বাঁট, সাগর ও রুনির রক্তমাখা জামা-কাপড়ের অংশ, সাগরের হাত-পায়ে বাঁধা দড়ির অংশ, সাগরের মোজা ও একটি কম্বল। এছাড়াও ডিএনএ করা হয়েছে ভিসেরা, ফুট প্রিন্ট ও ফিঙ্গার প্রিন্ট। র্যাব বলছে, যে ২৫ জনের ছাপ পাওয়া গেছে তাদের ইতিমধ্যে তালিকা করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তির ডিএনএ ৯০ শতাংশ হলে হবে না।
পুরোপুরি মিল হতে হবে। পুরো মিল পাওয়ার পর তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। নিশ্চিত হওয়ার আগে ওই ব্যক্তি সমদ্ধে সাগর ও রুনির পরিবারকে জিজ্ঞাসা করবে র্যাব। র্যাব বলছে, তারা খুনিকে চিহ্নিত করতে কাজ করছেন। তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। এ বিষয়ে র্যাব’র আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন মানবজমিনকে বলেন, ‘ডিএনএ টেস্টে যাদের ছাপ পাওয়া গেছে তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। নিশ্চিত না হয়ে কাউকে খুনের সঙ্গে জড়িত বলার সুযোগ নেই।’
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, র্যাব’র হাতে তদন্তভার স্থানান্তরের পর অন্তত ৯৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সংস্থাটি। এদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে অধিকতর সন্দেহভাজন হিসেবে একটি ‘শর্ট লিস্ট’ তৈরি করা হয়েছিল। আমেরিকা থেকে পাওয়া পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রতিবেদন হাতে আসার পর ইতিমধ্যে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ নমুনা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। ডিএনএ’র সঙ্গে ম্যাচিং হলেই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সূত্র জানায়, মামলাটি জটিল। যাতে কোনো পক্ষই মামলার তদন্ত এবং ডিএনএ নিয়ে কোনো কথা বলতে না পারে সেই দিক লক্ষ্য করেই সামনে এগুচ্ছে র্যাব।