এক্সক্লুসিভরাজধানীস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

ঢাকা ও আশেপাশে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ

ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ঘণ্টায় ৫০ জনের বেশি রোগী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মহাখালী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আইসিডিডিআরবি বলছে, প্রতিষ্ঠানের ৬০ বছরের ইতিহাসে এত রোগীর চাপ তারা দেখেনি।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালের প্রধান বাহারুল আলম বলেন, রোগীদের সিংহভাগ বয়স্ক। তবে রোগীদের ৩০ শতাংশ তীব্র ডায়রিয়া বা কলেরায় আক্রান্ত। তিনি বলেন, ‘এ সময় কেন ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে, তার সঠিক উত্তর জানতে হলে গবেষণার দরকার। তবে সাধারণভাবে এটা বলা যায়, গরমে মানুষ রাস্তার পাশের খাবার খাচ্ছে, অনিরাপদ পানি পান করছে। এগুলোই হয়তো কারণ।’

হাসপাতালের শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় তাঁবু টানিয়ে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে আইসিডিডিআরবি। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, রোগীর চাপ কমে আসার কোনো লক্ষণ না থাকায় তারা দ্বিতীয় তাঁবু ফেলে হাসপাতাল বড় করতে যাচ্ছে।

আইসিডিডিআরবি সূত্র বলছে, সারা বছর দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে রোগীর সংখ্যা কিছু বাড়ে। সাধারণত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে।

কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। আইসিডিডিআরবি কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে দৈনিক ৫০০–এর মতো রোগী এসেছে। দ্বিতীয় সপ্তাহে দৈনিক রোগী বেড়ে হয়েছে ৬০০। ১৭ মার্চ থেকে প্রতিদিন এক হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে। ২১ মার্চ রোগী ভর্তি হয়েছিল ১ হাজার ২১৬ জন। এর আগে কোনো সময় এক দিনে এত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। ওই দিন ঘণ্টায় ৫০ জন রোগী হাসপাতালে এসেছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর বলেন, এ সময় পানি ফুটিয়ে বা বড়ি দিয়ে বিশুদ্ধ করে খেতে হবে। হাত না ধুয়ে কোনো খাবার খাওয়া উচিত হবে না। রাস্তার পাশের খাবার ও বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

২১ মার্চ রাত ১২টার পর থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত অর্থাৎ ১৭ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছিল ৮৭৫ জন। গতকাল ঘণ্টায় ৫১ জন করে রোগী ভর্তি হয়েছে। এত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন আইসিডিডিআরবির চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে সব চিকিৎসা হচ্ছে বিনা মূল্যে। ভর্তি রোগীর বড় অংশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতাল ছাড়তে পারছে।

Back to top button