আগামী ২০২৩ সালে হতে যাওয়া আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে গুম, ক্রসফায়ারের মতো ঘটনা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আজ সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) এর আয়োজনে ‘কোথায় আছেন তারা? বাংলাদেশে গুমের ঘটনা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনার আলোচনায় এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আলোচকরা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ক্ষমতাসীনরা তাদের অবৈধ সম্পদ রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ক্ষেত্র বিশেষে তারা গুমের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। তিনি বলেন, প্রাইভেটাইজেশন ভায়োলেশন বা দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নে জড়িত ব্যক্তিরা এক্ষেত্রে গুম খুনের ঘটায় তাদের ভাড়া করা কিংবা নিজেদের সৃষ্টি করা বাহিনীর ব্যবহার করে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নূর খান বলেন, আগামী ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে জঙ্গি উথানের বিষয়টি দেখিয়ে দেশে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ক্রসফায়ারের পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দিয়ে গুমের ঘটনা কমে এসেছে। পাশাপাশি এটি একেবারে কমে গেছে বলার সুযোগ নেই। কারণ, এখনকার সময় থেকেও আগামী নির্বাচনের আগে ভয়াবহভাবে গুমের ঘটনা বেড়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এই ওয়েবিনারের মুখ্য আলোচক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেস ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইসড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ ‘কোথায় আছেন তারা? বাংলাদেশে গুমের ঘটনা ‘ বিষয়ক গবেষণার বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন। ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হওয়া এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর তিন বছর সময়কাল পর্যন্ত গুমের শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য মতে, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৩৭৮ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন বলে এই গবেষণায় তুলে ধরা হয়। সিজিএস এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের আলোচনায় অংশ নেন বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর তিন বছর সময়কাল পর্যন্ত গুমের শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে ৭১ জন ব্যক্তির গুম হওয়ার ঘটনা শনাক্ত করা হয়। যারা কমপক্ষে দু’দিন নিখোঁজ ছিলেন। এছাড়া অধিকারের তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৫২২ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।