এসএসসি পরীক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর দেড় মাস পর সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট বোনকেও উঠিয়ে নেওয়ার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার পূর্ব মজিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং রামপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা।
সম্প্রতি তার ছোট মেয়ে সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া লিজা মনিকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে উত্যক্ত করতে শুরু করে বখাটে মনির হোসেন। কিছুদিন আগে বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে আসার পথে তাকে কুপ্রস্তাব দেয় মনির। বাড়িতে এসে বিষয়টি তার বাবাকে জানালে তিনি ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান।
তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে বখাটে মনির পালিয়ে যায়। এতে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৩ মার্চ রাতে দলবল নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় বাড়িতে এসে ছোট মেয়েকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় বাবা তাদের বাধা দিতে গেলে তাকে মারধর করা হয়। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।
ওই স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে পার্শ্ববর্তী কটিয়াদী উপজেলার নোয়াকান্দী গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে মনির হোসেনের নেতৃত্বে একই এলাকার জালালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রুস্তম আলীর ছেলে তারেক, বকুল মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম এবং মনোহরদী উপজেলার চরমান্দালিয়া মুন্সিপাড়ার শাহজাহান মিয়ার ছেলে মুরশিদ মিয়াসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ নিয়ে বাড়িতে এসে জোরপূর্বক আমার বড় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উঠিয়ে কটিয়াদীর নোয়াকান্দী এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তিতে আমাদেরকে না জানিয়ে মেয়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে বখাটে রবিউল ইসলামের সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়।
গত ১৩ই মার্চ পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই মনির ও তারেকসহ বখাটেরা মোটরসাইকেল নিয়ে ওই বাড়িতে এসে ছোট মেয়েটাকে একা পেলে উঠিয়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। বখাটেদের উপর্যুপরি হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই পরিবারের লোকজন।এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনির হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল কাদির বলেন, ঘটনাটি জানার পর অভিযুক্ত তারেকের চাচা আরিফুল ইসলাম কাঞ্চনকে জানানো হয়েছে। তিনি তাদেরকে এই এলাকায় আসতে নিষেধ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু বখাটেরা তার কথা শোনেনি।
পরবর্তিতে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনা সর্ম্পকে জানানো হয়েছে। এই এলাকাটি মনোহরদী উপজেলার শেষ প্রান্ত এবং কটিয়াদী উপজেলা সংলগ্ন হওয়ায় ওই পাড়ের লোকজন বিভিন্ন সময় এই এলাকায় এসে প্রভাব বিস্তার করে থাকে।