আমদানি পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলে ভ্যাট কমানোর ঘোষণা গতকাল মঙ্গলবারই দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেল আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ অব্যাহত থাকবে।
কিছুদিন ধরেই স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম চড়া। ইউক্রেনে রুশ হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারেও তেলের দাম বেড়ে যায়। এমন প্রেক্ষাপটে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের সুপারিশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দেয়। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেও একই দাবি জানানো হয়। বিভিন্ন মহলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পর্যায়ে ভোজ্যতেলের ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলো। আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হলো।
এর আগে গত সোমবার পরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পরিশোধিত পাম তেলের স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায় পর্যায়ে সব মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ সুযোগও আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এত দিন সয়াবিন ও পাম তেলের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায় পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা ছিল।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত যখন এল, তখন রোজার পণ্যের সিংহভাগই বাজারজাত হয়ে গেছে। ১৮ মার্চ শবে বরাতের পর রোজার পণ্যের বেচাকেনা শুরু হবে। সেই হিসেবে ভ্যাট কমানোর সুফল কতটুকু ভোক্তারা রোজার বাজারে পাবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে পবিত্র রমজান মাসের চাহিদা তিন লাখ টনের কাছাকাছি। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় ২ লাখ টন, বাকি ১৮ লাখ টনই আমদানি করতে হয়।চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ইতিমধ্যে খালাস হওয়া অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানিমূল্য পড়েছে প্রতি কেজি ১১৮ থেকে ১২২ টাকা।নতুন যেসব চালান আসছে, সেগুলোর আমদানিমূল্য কমবেশি ১২৭ টাকা পড়বে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
সেই হিসাবে কেজিপ্রতি ভ্যাট বাবদ ১২ টাকা দিতে হবে না ব্যবসায়ীদের। একইভাবে পাম তেল আমদানিতেও খরচ কমতে পারে ১২ টাকার কাছাকাছি। তবে এখন যে তেল বাজারজাত করা হচ্ছে, তা ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়েই খালাস করা হয়েছে। নতুন চালান খালাস করে বাজারজাত করতে করতে রোজা চলে আসবে।