ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামে নাপা সিরাপ খেয়ে একই পরিবারের দুই শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সারাদেশ থেকে নাপা সিরাপের নির্ধারিত ব্যাচের (ব্যাচ নং-৩২১১৩১২১) নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। পাশাপাশি কারও কাছে ওষুধ থাকলে তা দ্রুত নিকটস্থ কেমিস্ট অফিসকে অবহিত করতে এবং সেটি বিক্রি থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ মার্চ দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে জানা যায় যে মেসার্স বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃক উৎপাদিত নাপা সিরাপ (প্যারাসিটামল ১২০মিগ্রা./৫ মি.লি.) ব্যাচ নং- ৩২১১৩১২১, উৎপাদন তারিখ: ১২/২০২১, মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ: ১১/২০২৩ নামীয় ওষুধটি সেবন করে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে একই পরিবারের ২ শিশু মৃত্যুবরণ করেছে।
আজ রোববার দুপুরে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক আইয়ুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক জরুরি অফিস আদেশে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়।ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তাকে স্ব-স্ব নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় অবস্থিত পাইকারি ও খুচরা ফার্মেসি পরিদর্শন করে ওই পদের নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামে ইটভাটা শ্রমিক সুজন খানের দুই শিশু সন্তান ইয়াছিন খান এবং মোরসালিন খান জ্বরে আক্রান্ত হয়। এতে গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাতে বাড়ির পাশের বাজারের ‘মা ফার্মেসি’ থেকে বেক্সিমকোর তৈরি নাপা সিরাপ নিয়ে শিশুদের সেবন করান।
এরপর ওই দুই শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের রাতেই আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসক শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এ অবস্থায় বাড়ি ফেরার পথে ইয়াছিন ও বাড়িতে ফেরার পর মোরসালিন মারা যায়।
মারা যাওয়া দুই শিশুর চাচা ফোরকান ও উজ্জল মিয়া জানান, নাপা সিরাপ খাওয়ানোর পরেই তারা মারা গেছে। একই ঘরে দুই সহোদরের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর শুক্রবার রাতে জেলায় নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। তা শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।