মেটার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার পথে হাঁটছে রাশিয়া
রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে সহিংস পোস্ট অনুমোদন দেওয়ায় এর মূল প্রতিষ্ঠান মেটার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার পথে হাঁটছে রাশিয়া। এ ছাড়া মেটার ইনস্টাগ্রাম সেবা নিষিদ্ধ করেছে। গত শুক্রবার ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর এএফপির।
রাশিয়ার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোমবার থেকে রাশিয়ায় জনপ্রিয় ইনস্টাগ্রাম সেবাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে; কারণ, এতে সহিংসতার বিষয়টি উসকে দেওয়া হচ্ছে।এদিকে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান নিক ক্লেগ বলেন, সহিংস পোস্টের ক্ষেত্রে ফেসবুক যে শিথিল নীতিমালা নিচ্ছে, তা কেবল ইউক্রেনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার পর থেকে পশ্চিমা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রুশ গণমাধ্যমগুলোর পোস্ট নিষিদ্ধ করেছে। এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার সীমিত করে। তবে মেটার পক্ষ থেকে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার পোস্ট অনুমোদন দেওয়া ও রাষ্ট্রপ্রধানদের মৃত্যু কামনার পোস্ট ফিল্টার না করার ঘোষণা আসার পর রাশিয়া কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
এর আগে মেটার পক্ষ থেকে ফেসবুকের সম্পাদকদের কাছে পাঠানো এক মেইলে বলা হয়, নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। রুশ সেনাদের হামলার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে রাশিয়ার বেসামরিক লোকজন যাতে এর লক্ষ্যবস্তু না হয়, সে বিষয় নিষিদ্ধ থাকছে।রাশিয়ার বিরুদ্ধে সহিংস নীতিমালা পরিবর্তনের বিষয়টি আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, এস্তোনিয়া, জর্জিয়া, হাঙ্গেরি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, রাশিয়া, স্লোভাকিয়া ও ইউক্রেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে মেইলে বলা হয়।
২০২১ সালে রাশিয়ার ফেসবুক ব্যবহারকারী ছিল ৭৫ লাখ, যা দেশটির মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মাত্র ৭ শতাংশ। তবে দেশটিতে ৫ কোটির বেশি মানুষ ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন, যার অধিকাংশই তরুণ।মেটার পক্ষ থেকে ঘৃণিত বক্তব্য বা হেট স্পিচ নিয়ে নীতিমালা শিথিল করার ঘোষণার পর দ্রুত সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, এতে রুশদের প্রতি ঘৃণিত বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান নিক ক্লেগ বলেন, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মে রাশিয়ানদের প্রতি সহিংসতা, রুশোফোবিয়া বা কোনো ধরনের বৈষম্য বা হয়রানি সহ্য করব না।’তবে রাশিয়ার অপরাধ তদন্ত কমিটি বলেছে, মেটার বিরুদ্ধে তারা তদন্ত করেছে। কৌঁসুলিরা মেটার বিরুদ্ধে চরমপন্থার অভিযোগ তুলেছেন।জাতিসংঘের অধিকারবিষয়ক মুখপাত্র এলিজাবেথ থ্রসেল বলেন, মেটার নীতিমালায় অস্পষ্টতা রয়েছে। এতে সাধারণ রুশ নাগরিকদের প্রতি ঘৃণিত বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তে পারে।