অপরাধআইন-আদালতএক্সক্লুসিভগাজীপুরঢাকাবরগুনাবাংলাদেশ

কারাগারে মিন্নির শরীরে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে

স্বামী শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বর্তমানে কাশিমপুর মহিলা কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি আছেন। পরিবারের দাবি, কারাগারে ভাল নেই মিন্নি। নানা অসুথ বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। সরাসরি সাক্ষাৎ না হলেও টেলিফোনে পরিবারের সাথে সপ্তাহে একদিন কথা হয় তার। তাকে এখন চেনাই দুষ্কর। তার মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করলেও করোনার কারণে উচ্চ আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ফলে আপিলের কোন অগ্রগতি নেই।

রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। আদালতের আদেশের পর বরগুনা জেলা কারাগার থেকে মিন্নিকে নেওয়া হয় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে। সেখানে কনডেম সেলে অবস্থান করছেন মিন্নি।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা শহরের সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কু‌‌পিয়ে হত্যা করা হয় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে। এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন তারই স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। পরবর্তীতে মিন্নিই হয়ে যান মামলার অন্যতম আসামি। কারণ তার পরিকল্পনাতেই প্রেমিক নয়ন বন্ড হত্যা করেছিল স্বামী রিফাতকে। পরে ওই বছরের ২ জুলাই পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নয়ন বন্ড।

নিম্ম আদালতের দেওয়া মিন্নির মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে তার পরিবার। করোনার কারণে উচ্চ আদালত বন্ধ থাকায় আপিল শুনানি হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আপিলের শুনানি নিষ্পত্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা ।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, কারাগারে মিন্নি ভালো নেই। সেখানে খেতে পারে না, ঘুমাতে পারে না। সব সময় অসুস্থ থাকে। তার শরীরে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে। অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে মিন্নি। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার কারণে তাকে চেনাই এখন দুষ্কর।

কারাগারের একটি সূত্র জানায়, কারাগারের কন্ডেম সেলে সুস্থ আছে মিন্নি। কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী মৃ’ত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা সাধারণত কনডেম সেলে একা থাকে। কিন্তু কাশিমপুর মহিলা কারাগারে অতিরিক্ত কয়েদি থাকায় একটি কনডেম সেলে তিনজনকে রাখা হচ্ছে। কারাগারের ওই সূত্রটি জানায়, করোনার কারণে কয়েদিদের সাথে সাক্ষাত একেবারেই বন্ধ রয়েছে। তবে প্রতি সপ্তাহে পরিবারের সাথে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ আছে। মিন্নি পরিবারের সরাসরি সাথে সাক্ষাত করতে না পারলেও টেলিফোনে কথা বলেন প্রতি সপ্তাহে।

তবে মিন্নির বাবা বলেন, ওর দাঁতে ব্যাথা ছিল। শুনেছি কারাগারের চিকিৎসক তার দাঁত তুলেছে। দাঁতের ব্যথার জন্য তাকে দুই থেকে তিনবার কারাগারের বাইরেও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিম্ম আদালতে ফাঁসির আদেশ দেওয়ার তিন থেকে চারদিনের মধ্যেই আমরা আপিল করেছি। করোনার কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোন অগ্রগতি নেই।

Back to top button