জাস্টিন ট্রুডোর রাশিয়ার তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো রাশিয়ার তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রুডো বলেছেন, তেল বিক্রির টাকায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও সে দেশের বিত্তবানদের পকেট ভারী হয়, সে জন্য কানাডা রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনবে না।
এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেছেন, কানাডা সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া থেকে তেমন একটা তেল আমদানি করেনি। তা সত্ত্বেও ট্রুডো মনে করেন, কানাডার এই ব্যবস্থা বিশ্ব সম্প্রদায়কে শক্তিশালী বার্তা দেয়। পরিসংখ্যান অনুসারে, কানাডা ২০২১ সালে প্রায় ২৯ কোটি ঘনফুট গ্যাস রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে। আর কানাডা শুধু তেল আমদানি করে না, তারা একই সঙ্গে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর সমন্বিত নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু এখন পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে এখন পর্যন্ত তারা রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি করছে। তবে ইউরোপ যতটা রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভরশীল, কানাডা ততটা নয়।
ইউরোপ অবশ্য রাশিয়ার গ্যাস ও তেল সরবরাহের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পেট্রোলিয়াম আমদানির এক–চতুর্থাংশ ও প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির প্রায় ৪০ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে।রাশিয়ার এই আগ্রাসনের জেরে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।যুক্তরাজ্য মূলত নরওয়ে ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিংহভাগ জ্বালানি রপ্তানি করে। কিন্তু ইউক্রেনের রুশ আক্রমণের প্রভাবে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে যে প্রভাব পড়েছে, তার জেরে যুক্তরাজ্যে জ্বালানির দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
পশ্চিমা দেশগুলো সম্প্রতি রাশিয়ার কিছু ব্যাংকে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা সুইফট থেকে বিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন তারা যদি রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস না কেনার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার হবে। কিন্তু নীতিনির্ধারকেরা এখন পর্যন্ত এই পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুক, তাঁদের মনে শঙ্কা, এতে তাঁদের নিজেদের দেশে জ্বালানির দাম আরও বাড়বে।
তেল ও গ্যাস রপ্তানি থেকে রাশিয়ার অর্থনীতির পাঁচ ভাগের এক ভাগ আসে। দেশটির রপ্তানি আয়ের অর্ধেক আসে এই জ্বালানি থেকে। ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, তেল ব্যবসার ক্ষেত্রে রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম অংশীদার।
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলো শুক্রবার ঘোষণা করেছে, তারা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, যাতে তারা নিজেদের ব্যাংক ও কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করতে রিজার্ভের অর্থ ব্যবহার করতে না পারে।রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে এখন ৬৩ হাজার কোটি ডলার রিজার্ভ আছে।