প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হওয়া যুবকের ‘গণধর্ষণের’ হুমকি পেয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক মাদরাসাছাত্রী। চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়িতে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের জাহাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।নিহত শিউলী আক্তার (১৬) ওই গ্রামের শওকত আলী বেপারীর মেয়ে ও জাহাপুর দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
শিউলীর মা রহিমা বেগম বলেন, শিউলী পুরো ঘটনাটি তাকে জানানোর পর রাকিবের পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি জানিয়ে বিচার দাবি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাকিব যৌন হয়রানির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। গত ২১ জানুয়ারি তিনি রাকিবের বাড়িতে গিয়ে তাকে শেষবারের মতো শাষিয়ে আসেন।
এ সময় তিনি আইনের আশ্রয় নেওয়ারও হুমকি দেন। এতে আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে রাকিব মোবাইল ফোনে শিউলীকে গণধর্ষণের হুমকি দেন।শিউলীকে পার্শ্ববর্তী বখাটে রাকিব ফকির (৩০) দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তার মেয়ে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় বিভিন্ন ধরনের যৌন হয়রানি করে আসছিলেন রাকিব।এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহবুবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাদ্রাসাছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গণধর্ষণের হুমকির পর অভিমান করে ওই দিন বিকেলে পরিবারের সবার অজান্তে শিউলী নিজ ঘরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় শিউলীকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেন।
রহিমা বেগম বলেন, সেখানে তার মেয়ে শিউলীর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার শিউলীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় ও আর্থিক সংকটে চিকিৎসা করাতে না পেরে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়িতেই শিউলীর মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে তার ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে নিজের জীবন দিতে হয়েছে।’