প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বড় কর্মকর্তা সেজে ভিআইপিদের প্রতারণা অবশেষে গ্রেপ্তার

করোনা রোগীদের আর্থিক সহায়তা করার কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বড় কর্মকর্তাদের পরিচয় দিয়ে সংসদ সদস্যদের কল দেন। আবার কখনো কখনো সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পরিচয় দেন। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা।

প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তির নাম আবু হোরায়রা ওরফে খালিদ।দেশের কয়েকজন ভিআইপির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে হোরায়রাকে খুঁজতে থাকে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। দীর্ঘ এক মাস নানা চেষ্টার পর বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় ডিবির একটি টিম।

ডিবির এডিসি মো. নাজমুল হক বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামালের নাম ব্যবহার করে চাঁদা দাবি করে আসছেন হোরায়রা। বিষয়টি নজরে এলে এসএম কামাল প্রথমে একটি জিডি করেন। গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অরগানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম এ প্রতারককে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

এসএম কামালের পক্ষে তাঁর সহযোগী কার্তিক বিশ্বাস (শুভ) বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হোরায়রার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নামে ডিবি। প্রথমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হোরায়রার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে নাটোর জেলার সিংড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক শুধু এসএম কামাল নয়, আরও অনেক কেন্দ্রীয় নেতা, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অনেক সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রী ও তাদের পিএস, এপিএস পরিচয়েও প্রতারণা করেছেন।

ডিবির অরগানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল হক বলেন, আবু হোরায়রা প্রথমে ভুয়া পরিচয়ে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ফেসবুক ও নানা অনলাইন মাধ্যম থেকে টার্গেট করা ব্যক্তির নাম্বার সংগ্রহ করেন।

এরপর নিজেকে কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বড় কর্মকর্তা, কখনো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, কখনো মন্ত্রী ইত্যাদি ভুয়া পরিচয় দিয়ে অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে কণ্ঠ পরিবর্তন করে কল দিয়ে বলেন, করোনাকালীন অর্থ সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি ট্রাস্ট গঠন করেছেন। সেই ট্রাস্টে অর্থ প্রেরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন।

টার্গেট করা বা ভুক্তভোগী ব্যক্তি টাকা দিতে সম্মত হলে ভুয়া নিবন্ধিত বিকাশ, নগদ নাম্বার দিয়ে টাকা নিয়ে নেন হোরায়রা। যেহেতু তিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তা বা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বা মন্ত্রীর পরিচয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্সে টাকা চান, তাই অনেকে ভেরিফাই না করেই টাকা দিয়ে দেন। তার প্রতারণায় পা দিয়েছেন সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও।  

Exit mobile version