আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুতরা নানা অপরাধে জড়াচ্ছেন

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে বিভিন্ন অপকর্ম করে চাকরিচ্যুত হয়ে যাওয়ারা পরে সমাজে নানারকম অপকর্মে জড়াচ্ছে। বিশেষ করে ভুয়া ডিবির দল সাজিয়ে, ফেসবুকে অনলাইন মার্কেটিং এর নামে, অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ও অপহরণ করে টাকা আদায় করছে তারা।

তারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জ্যাকেট, কোমরে পিস্তল ও ওয়াকিটকি আর হাতে হাতকড়া নিয়ে রাতের বেলায় সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সব কিছু কেড়ে নিচ্ছে। চাকুরিচ্যুতদের নজরদারি করার জন্য আলাদা কোন সেল নেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। পুলিশ বলছে, এসব অপরাধ সব সময় ছিল। যারা চাকরিচ্যুত তারা বেকার সমস্যার কারণে অনেকেই এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।

চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে যাওয়া, সঠিক কর্মসংস্থান না পাওয়া, হতাশাগ্রস্ত হওয়া ও সামাজিকভাবে সম্মান হারানোর পরে তারা এমন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে চাকরিচ্যুতদের নেতৃত্বে এমন অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। তারা ১০ থেকে ১৫ জনের গ্রুপ তৈরি করে দেশের বিভিন্নস্থানে অপরাধ করছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন ও মিডিয়া) হায়দার আলী খান জানান, সমাজে যারাই অপরাধ করছে তাদেরই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।পুলিশ বসে নেই। যখনই এমন কোন অপরাধী অপরাধ সংগঠিত করছে তাদের দমনে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৪ই জুলাই অস্ত্র ও পুলিশি সরঞ্জামসহ ভুয়া ডিবি পরিচয়দানকারী ৪ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি বন্দুক, একটি চাপাতি, দুটি লোহার বাটযুক্ত ছুরি, ডিবির জ্যাকেট, ১টি খেলনা পিস্তল, একটি ওয়্যারলেস সেট, একজোড়া হ্যান্ডকাফ এক লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

তারা ডিবি পুলিশের ছদ্মবেশে রাতে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট বসিয়ে ডাকাতি করতো। তারা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, আজিজ নামে একজন তাদের দলের নেতা। সে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে তাদের টিমের নেতৃত্বে দেয়। এছাড়াও ঢাকার যে সব ভুয়া ডিবির দল ধরা পড়ে তাদের মধ্যে একাধিক জন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে চাকরি হারিয়ে এসব দলে যোগ দেয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মো. মশিউর রহমান জানান, আমরা ভুয়া ডিবির একাধিক গ্রুপকে গ্রেপ্তার করেছি। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা গেছে, কয়েকজন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে চাকরিচ্যুত হয়ে ভুয়া ডিবির দলে যোগ দিয়েছে। আমরা এই চক্রকে দমনে কাজ করছি। আগের মতো ঢাকায় আর ভুয়া ডিবির দৌরাত্ম নেই। পুলিশের কঠোর নজরদারিরর কারণে এ চক্রের সক্রিয়তা হারিয়েছে। আমরা ভুয়া ডিবির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

সূত্র জানায়, এসব অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আলাদা কোন সেল নেই। যদি তিনি চাকরিচ্যুত হয়ে যান তাহলে তার পরবর্তী জীবনে কোন কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন বা সমাজে কী অবস্থায় আয় করছেন তাদের কোন খবর থাকে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। অপরাধ করে ধরা পড়লেই কেবল তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হয়।

Exit mobile version