ইথিওপিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়ে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গতবছর ইথিওপিয়ার আমহারা প্রদেশের দুইটি শহরে নির্বিচারে গণধর্ষণ চালিয়েছে তাইগ্রে বিদ্রোহীরা। এই বিষয়ে ৩০ জন নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলেছে অ্যামনেস্টি। আক্রান্তদের বয়ানে উঠে এসেছে ভয়াবহ অত্যাচারের বিবররণ। তারা জানিয়েছেন, তাইগ্রে বিদ্রোহীরা তাদের গণধর্ষণ করেছে।
যুদ্ধের হাতিয়ার গণধর্ষণ। শত্রুপক্ষের মনোবল ভেঙে দিতে প্রতিপক্ষের নারীদের সম্ভ্রম কেড়ে নেওয়া ও নাবালিকাদের যৌনদাসী করার প্রথা নতুন কিছু নয়। আরও একবার এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল গৃহযুদ্ধে জর্জর ইথিওপিয়া। অভিযোগ, দেশটিতে নির্বিচারে গণধর্ষণ চালিয়েছে তাইগ্রে বিদ্রোহীরা।
অ্যামনেস্টির রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতিশোধ নিতেই আমহারা প্রদেশের কবো ও নিফাস মিউচা শহরে হামলা চালায় তাইগ্রে যোদ্ধারা। কারণ তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের বিরুদ্ধে সরকারের হয়ে লড়াই করছে আমহারা মিলিশিয়াগুলি। ওই শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিরস্ত্র নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করেছে তাইগ্রে হামলকারীরা।
আক্রান্তদের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেকেরই শরীরে গুরুতর আঘাত ছিল। কয়েকজনের গোপনাঙ্গে বেয়নেট ঢুকিয়ে দিয়েছিল হামলকারীরা। ১৪ বছরের এক নির্যাতিতা জানায়, তাকে ও তার মাকে একইসঙ্গে ধর্ষণ করে তাইগ্রে বিদ্রোহী যোদ্ধারা। ওই নাবালিকার কথায়, আমাকে উঠানে ও মাকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে তারা। এরপর থেকেই আমার মা অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই বিষয়ে আমরা মুখ খুলতে চাই না।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বরে তাইগ্রেতে ইথিওপিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে আকস্মিক হামলা হয়। এরপর দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এই প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে আইনের শাসন ফেরাতে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। ফলে শুরু হয় ভয়ানক গৃহযুদ্ধ।পরিস্থিত এমন জায়গায় পৌঁছায় যে মেকেলে ফের দখল করে রাজধানী আদ্দিস আবাবার দিকে এগিয়ে আসে বিদ্রোহীরা। তবে সম্প্রতি দুইপক্ষই শান্তির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।