অপরাধআইন-আদালতআওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভবরগুনারাজনীতি

আদালতের হাজতখানায় বিধি লঙ্ঘন করে মুঠোফোনের ক্যামেরায় সেলফি

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলেন বরগুনার বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন। আদালত তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে নেওয়ার আগে তাঁদের রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়।

প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে প্রচারণার সময় বরগুনার বামনা উপজেলার বামনা সদর ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুজ্জামান ও বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের শতাধিক কর্মী আহত হন।

সে সময় পুলিশের করা মামলায় কারাগারে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুজ্জামান। পরে বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেনকে প্রধান আসামি ও সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়াকে ২ নম্বর আসামি করে ২৭ জনের নামে মামলা করেন তারিকুজ্জামান।

সেই মামলায় ছাত্রলীগ নেতা মোর্শেদ শাহরিয়ার ও আল-আমিন হোসেন আজ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাঁদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতের হাজতখানায় মুঠোফোন রাখা নিষিদ্ধ। কিন্তু ওই আইন লঙ্ঘন করে হাজতখানায় তাঁরা মুঠোফোন রাখেন এবং সেই মুঠোফোনের ক্যামেরায় সেলফি তুলেন।বুধবার হাজতখানায় তোলা তাঁদের সেই সেলফি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয় ।

বুধবার দুপুরে ছাত্রলীগ সভাপতি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ছবিটি পোস্ট করে লেখেন, ‘নৌকার নির্বাচন করতে গিয়ে কারাবরণ করতে হলো আমাদের।’ছবিতে দেখা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার মধ্যে দাঁড়িয়ে সভাপতি শাহরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আল–আমিন সেলফি তুলছেন।

মামলার বাদী তারিকুজ্জামান বলেন, ‘আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আদালতের এজলাস থেকে শুরু করে হাজতখানার মধ্যেও তাঁরা মোবাইল নিয়ে সেলফি তুলছেন। ফেসবুকে আবার সেসব ছবি পোস্ট করছেন। আমি এখনো অনিরাপদবোধ করছি। হয়তো দেখা যাবে, তাঁরা জামিনে বের হয়ে আমার ও আমার স্বজনদের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আদালতের পরিদর্শক মারুফ আহমেদ বলেন, আদালতের বাইরে থেকে তাঁর সমর্থকেরা গোপনে ছবি তুলে নিয়ে যেতে পারেন। তবে হাজতখানার ভেতরে মুঠোফোন নিয়ে সেলফি তোলার কোনো সুযোগ নেই।

এ সময় হাজতখানার মধ্যে তোলা সেলফি তাঁকে দেখানোর পরে তিনি বলেন, ‘হাজতখানার দায়িত্বে যেসব পুলিশ সদস্যরা ছিলেন, তাঁদের গাফিলতি থাকতে পারে। আমরা যখন কোনো আসামিকে হাজতখানায় নিয়ে আসি, তখন শরীরে তল্লাশি চালিয়ে ব্যাগ, মোবাইল, ক্যামেরা বাইরে রেখে দিই।

তবে আসামিদের সঙ্গে তাঁদের স্বজনেরা আসেন, হয়তো তাঁরা কোনোভাবে ছবি তুলে থাকতে পারেন।’জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, আদালতের হাজতখানায় মুঠোফোন নিষিদ্ধ। যদি কেউ নিয়ে থাকেন, সেটি দণ্ডনীয় অপরাধ।

Back to top button