আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ডিজিটাল আইডি কার্ড পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আজ রোববার তিনি এ কথা জানান।
মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে হবে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ার হিরো হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের যতটুকু পাওয়া উচিত, তা তাঁরা এখনো পাননি। যদিও আমরা কিছু পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করিনি। কিন্তু তারপরও রাষ্ট্রের যেহেতু সক্ষমতা আছে, তাই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্যটুকু দেওয়া উচিত।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের একটা তালিকা করা আছে। ২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা ডিজিটাল আইডি কার্ড পাবেন। মুজিববর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০ হাজার ঘর দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।’নতুন প্রজন্ম মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা সঠিকভাবে জানে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের জিজ্ঞেস করলে বলতে পারে না তাঁর বাবা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছিল। সন্তানেরা জানে না তাঁদের বাবার বীরত্বগাথা। আমি আমার সন্তানকে দোষ দেব না। দোষ আমার। আমি তাঁকে শেখাতে পারিনি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান। তিনি বলেন, ‘আমাদের গর্ব আমরা মুক্তিযোদ্ধা। অনেকেই জন্মাবে, কিন্তু কেউ আর মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবে না। মুক্তিযোদ্ধারা এখন সংখ্যায় অনেক কম। আর দশ বছর পরে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হবে কোথায় মুক্তিযোদ্ধা আছে।’
মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের মধ্যেও বিভেদ রয়েছে উল্লেখ করে শাজাহান খান বলেন, ‘সবাই নেতা হতে চাই। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদেরও ১৩-১৪টা সংগঠন। দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধার ৪ লাখ সন্তান যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলেও অনেক কিছু করা সম্ভব। কিন্তু সেটা হয়নি।’
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে পারতাম না। সংসদ দখল করে বলা হয়েছিল, আমরা নাকি জিয়াউর রহমানের ঘোষণায় যুদ্ধ করেছি।’এ সময় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচন হতে কোনো বাঁধা নেই বলেও জানান মন্ত্রী।
এর আগে আজ সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনের সামনে পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিষ্ঠার ৫০ তম বার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। এ সময় সারা দেশ থেকে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা উপস্থিত ছিলেন।