নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ’- পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। অফিসে হানা দিয়ে সাংবাদিক ও স্টাফদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হত্যার হুমকি দেয় তারা। প্রায় ১৫ মিনিট অফিসে হৈচৈ-এর পর সেখানে থাকা সিসিটিভি’র ডিভাইস নিয়ে যায় ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। শনিবার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে ওই ঘটনা ঘটে। তবে হামলার সময়ে অফিসে সময়ের নারায়ণগঞ্জের চার সংবাদকর্মী বসা ছিলেন।
অফিসে ঢুকেই আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। তারা ১১ই ফেব্রুয়ারি সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকার লিড নিউজ ‘যা ছিল খসড়া চার্জশিটে’- সংবাদটি কেন প্রকাশ হয়েছে তার কৈফিয়ত জানতে চান। তারা বলতে থাকেন, ‘তোরা আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে নিউজ করস। কালকের মধ্যে পত্রিকায় এর জন্য ক্ষমা না চাইলে পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেবো ও সম্পাদককে গুলি করে মেরে ফেলবো।’
অফিসের প্রহরী হাফিজ উদ্দিন জানান, হঠাৎ করে শতাধিক লোকজন উপরে উঠতে চায়। তখন বাধা দিতে গেলে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে সবাই ওপরে ওঠে। অফিসে থাকা সময়ের নারায়ণগঞ্জের স্টাফ রিপোর্টার আরিফ হোসাইন কনক বলেন, ‘বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে অফিসের নিচে শতাধিক মোটরসাইকেল অবস্থান করে। পরে মোটরসাইকেল থেকে শতাধিক লোকজন সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠে।
সন্ত্রাসীরা প্রায় ১৫ মিনিট অফিসে অবস্থান করে হুমকি দিতে দিতে চলে যায়। যাওয়ার সময়ে তারা অফিসের বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেয়। সেইসঙ্গে অফিসে থাকা সিসি ক্যামেরার ডিভিআর ডিভাইস খুলে নিয়ে যায়। এছাড়া একটি পিসি’র হার্ডডিস্কও খুলে নিয়ে গেছে। ক্যামেরা ভাঙচুর করেছে।
সদর মডেল থানার ওসি শাহ জামান জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে পত্রিকা অফিসের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেবে বলে জানিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, বিষয়টা আমাকে অবগত করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সময়ের নারায়ণগঞ্জের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভিডিও ফুটেজে ওই হামলায় নাসির, আক্তার নূর, সুমন, সানি, ইসমাইল, আন্নান, কাজল, রুবেল, সিনাফি, রবিন, মনির, লক্ষণ, কৃষ্ণা, রাতুল প্রমুখকে চিহ্নিত করা গেছে। তাদের মধ্যে নাসির ও আক্তার নূর এর আগে একাধিকবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিল। সে এখন আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত।
সময়ের নারায়ণগঞ্জের প্রকাশক ও সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল দাবী করেন, সম্প্রতি ত্বকী হত্যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারী র্যাবের সেই প্রকাশিত খসড়া চার্জশীট নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। মূলত সেই খসড়া চার্জশিট র্যাব প্রকাশ করে এবং ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি গণমাধ্যমকর্মীদের সরবরাহ করে। সেটাই হুবহু তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আমাদের নিজেদের মনগড়া বক্তব্য নাই। কিন্তু তারা যেভাবে অফিসে হানা দিয়েছে সেটা ন্যক্কারজনক।