সাবেক হয়েও নিজের নামের সাথে এরশাদ যোগ করলেন বিদিশা
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের সাবেক স্ত্রী তিনি। এখন দলের একাংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নিজেকে জাতীয় পার্টির পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দাবি করে তিনি। এবার নিজের নামের সঙ্গে জুড়ে দিলেন এরশাদকেও।
প্রেসিডেন্ট পার্ককে জাতীয় পার্টির আশ্রয়স্থল দাবি করে বিদিশা বলেন, ‘আজকে জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন হকার্স পার্টি, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে। তারা চলে এসেছে। দেরিতে হলেও তারা বুঝতে পেরেছে জাতীয় পার্টির আসল ঠিকানা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট পার্ক। জাতীয় পার্টির আশ্রয়স্থল প্রেসিডেন্ট পার্ক। এখান থেকেই পার্টি পরিচালনা করতেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এখানে প্রেসিডেন্ট পার্কে এরিক বাস করে, আমি বাস করি। আমি বিশ্বাস করি হকার্স পার্টির মতো বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন আছে, তারাও এখানে আসবে।’
আজ শুক্রবার সকালে বনানীর প্রেসিডেন্ট পার্কে জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সুস্থতার জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন বিদিশা সিদ্দিক। যদিও তিনি উপস্থিত হননি। বিকেলে হকার্স পার্টির ব্যানারে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও গণমাধ্যমে পাঠান তিনি। সেখানে নিজেকে ‘বিদিশা এরশাদ’ বলে উল্লেখ করেন। এই পরিচয় দিয়ে জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে দল বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে উদ্দেশ করে এরশাদের প্রাক্তন স্ত্রী বলেন, ‘আমি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে বলতে চাই, লাঙল বিক্রি করে, জাতীয় পার্টি বিক্রি করে চাঁদা তুলে আপনি যে টাকা বানিয়েছেন, সেই টাকাগুলো এখন সময় এসেছে, পার্টির ফান্ডে আপনি জমা দেবেন। এই টাকা আপনি অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করতে পারবেন না। বহু পাচার করেছেন, আর পারবেন না। এই টাকা আপনার ফেরত দিতে হবে।’
ভিডিও বার্তায় বিদিশা বলেন, ‘আজকে এরশাদ নেই আমাদের মাঝে। রওশন এরশাদের অবস্থা ভালো না। এরশাদ ফ্যামিলি বলতে গেলে আছে শুধু সাদ এরশাদ, এরিক এবং আমি তাদের মা বিদিশা এরশাদ। আজকে যখন পিতা (এরশাদ) নেই, মা (রওশন) যখন অসুস্থ, নেতাকর্মীরা হতাশ। তাঁরা কোথায় যাবে? তাঁরা এরশাদ সাহেবের ভাইয়ের কাছে গেছেন। তাঁরা ভেবেছিলেন উনি (জিএম কাদের) হয়তো এরশাদ সাহেবের মতো দয়ালু মানুষ হবেন। কিন্তু ভাই কখনো ভাইয়ের জায়গা নিতে পারে না।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার নেতৃত্ব নিয়ে ছোট ভাই জিএম কাদের ও ভাবি রওশন এরশাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়েও দ্বন্দ্ব হয় তাঁদের। শেষে দুই পক্ষের সমঝোতায় জিএম কাদের জাপার চেয়ারম্যান হন। আর রওশন এরশাদ হন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা।
এদিকে এরশাদের মৃত্যুর পর ছেলে এরিকের কাছে থাকতে প্রেসিডেন্ট পার্কে ওঠেন বিদিশা। জিএম কাদের তখনই এটির বিরোধিতা করেছিলেন। এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে গত বছরের জুলাই মাসে জাতীয় পার্টি পুনর্গঠনের ঘোষণা দেন বিদিশা।