মার্কিন নাগরিক সাফায়েত মাহাবুব ফারায়জীকে ফাঁদে ফেলে হত্যা
হত্যাকাণ্ডের আগে মার্কিন নাগরিক সাফায়েত মাহাবুব ফারায়জীকে ফাঁদে ফেলতে মুঠোফোনের মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে এক রাতের জন্য ভাটারার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মামলার প্রধান আসামি সুজানা সালাম। সেই ফ্ল্যাটেই হত্যাকাণ্ড শেষে পালিয়ে যান সুজানা এবং অন্য আসামিরা।
গত বছরের ২৬শে ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৪টায় মদ্যপ অবস্থায় সুজানা সাফায়েতকে নিয়ে ভাটারার পশ্চিম নূরের চালার নোভা মঞ্জিলের চতুর্থতলার উত্তর পাশের ফ্ল্যাটে ওঠেন। ফ্ল্যাটটি একদিনের জন্য ভাড়া নেন সুজানা।গত বছরের ২৬শে ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৪টায় মদ্যপ অবস্থায় সুজানা সাফায়েতকে নিয়ে ভাটারার পশ্চিম নূরের চালার নোভা মঞ্জিলের চতুর্থতলার উত্তর পাশের ফ্ল্যাটে ওঠেন। ফ্ল্যাটটি একদিনের জন্য ভাড়া নেন সুজানা।
পরদিন দুপুর ২টায় সুজানা-সাফায়েত ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ফ্ল্যাট বন্ধ দেখা যায়। এ সময় বাসার মালিক কামরুল হক ফ্ল্যাটের দরজা খোলার জন্য বাইরে থেকে একাধিকবার ডাকাডাকি করেন। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরে ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা খুলে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন।
এ সময় তিনি দেখতে পান, সাফায়েত কক্ষের টয়লেটের কমোডের ওপর মাথা কাতকরা অবস্থায় পড়ে আছেন। বাড়ির মালিক ও কেয়ারটেকারসহ অন্যরা মিলে সাফায়েতকে কমোড থেকে মেঝেতে নামান। সাফায়েতের শরীরের বিভিন্ন অংশে সাতটির মতো বড় কোপানোর জখম রয়েছে। গত ২৬শে ডিসেম্বর রাত আড়াইটা থেকে পরদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মধ্যে কোনো এক সময় তাকে হত্যা করা হতে পারে।
হত্যাকাণ্ডের আগে সাফায়েত তার মায়ের কাছে বারবার বলছিলেন, তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। যে কোনো সময় সাফায়েতকে মেরে ফেলতে পারে। সাফায়েত একাধিকবার সুজানার সিন্ডিকেট থেকে বের হতে চেয়েও পারেননি। হত্যাকাণ্ডের আগে সাফায়েত এবং তার মা শামীমুন নাহার লিপি গত ১০ই ডিসেম্বর গুলশানের একটি হোটেলের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান চলাকালীন সাফায়েতকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করলে মা লিপি এগিয়ে যান। এ সময় লিপি এবং সাফায়েতকে মারধর করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মুঠোফোনে মার্কিন নাগরিক সাফায়েতের সঙ্গে পরিচয় হয় সুজানার। পরবর্তীতে তিনি সাফায়েতকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। সুজানা কৌশলে তাকে বিয়ে করে আমেরিকায় যেতে চেয়েছিলেন। সাফায়েতকে নিয়মিত প্রাণনাশসহ বিভিন্ন ধরনের চাপ এবং হুমকি প্রদান করতেন সুজানা।
সাফায়েতের মা শামীমুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, একাধিক মাধ্যমে জানতে পেরেছি হত্যাকাণ্ডের পরপরই সাফায়েতের মরদেহ ফ্ল্যাটে রেখে সুজানাসহ অন্যরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইং এর আবু ইউসুফ মানবজমিনকে বলেন, এখন পর্যন্ত আদালত থেকে মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আসেনি। আদালতের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে মামলাটি পিবিআইতে আসতে আরও সাত থেকে ১০দিন সময় লাগতে পারে।