চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ইউপি চেয়ারম্যানের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কাঞ্চনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রমজান আলীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাতে ওই ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য ফরহাদ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সপ্তম ধাপের নির্বাচনে কাঞ্চনা ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য নির্বাচিত হন ফরহাদ উদ্দিন। ওই ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য প্রার্থী আবু তৈয়ব কাঞ্চনা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী রমজান আলীর ভায়রা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নবনির্বাচিত সদস্য ফরহাদ উদ্দিন ৩০-৪০ জন কর্মী-সমর্থক নিয়ে পরাজিত প্রার্থী আবু তৈয়বের বাড়ির পাশে গিয়ে কটূক্তি ও উসকানিমূলক নানা স্লোগান দেন। তৈয়বের স্ত্রী বিষয়টি রমজান আলীকে জানান। রমজান আলী সন্ধ্যার দিকে গাড়ি নিয়ে ভায়রার বাড়িতে যান।
তিনি সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফিরে যাওয়ার সময় আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা ক্যাম্পাসের কাছাকাছি পৌঁছালে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ফরহাদের নেতৃত্বে চেয়ারম্যানের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। পরে দুর্বৃত্তরা চেয়ারম্যানের ভায়রার বাড়িতে গিয়ে হামলা ও গুলি ছুড়লে তিনজন আহত হন।
এ ছাড়া চেয়ারম্যান রমজান আলীর ভায়রার বাড়িতে হামলার ঘটনায় দুজন গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কাঞ্চনা আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা হলেন আব্বাস উদ্দিন (৩২), কামরুল ইসলাম (৪০) ও আবু তৈয়ব (৫০)।
তাদের প্রথমে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।খবর পেয়ে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান ও সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা এ টি এম মনজুর মোর্শেদ বলেন, গতকাল রাতে দুজন গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।সাতকানিয়া থানার ওসি আবদুল জলিল বলেন, নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ফরহাদ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কাঞ্চনা ইউপির চেয়ারম্যান রমজান আলী বলেন, ‘আমি গাড়ি নিয়ে আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসার কাছাকাছি পৌঁছার পরপরই ফরহাদ ও তাঁর লোকজন আমার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় আমি গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পাশের কবরস্থানে আশ্রয় নিই। পরে তাঁরা আমার ভায়রার বাড়িতে গিয়ে গুলি ছুড়ে ও ভাঙচুর করেন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ফরহাদের ছোট ভাই মোহাম্মদ রিফাত বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটেনি। ইউপি চেয়ারম্যান রমজান আলীর লোকজন গুলি করে উল্টো আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন।’