এক্সক্লুসিভজাতীয়বাংলাদেশবিএনপিরাজধানীরাজনীতি

অনুসন্ধান কমিটির কাছে কোনো নাম দেবে না বিএনপি

নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গঠিত অনুসন্ধান কমিটির কাছে কোনো নাম দেবে না বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ সোমবার এ কথা বলেন। রাজধানীর এক হাসপাতালে সন্ত্রাসী হামলায় আহত নাটোরের গুরুদাসপুরের বিএনপির নেতা আবদুল আজিজকে দেখতে যান মির্জা ফখরুল। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কথাগুলো বলেন তিনি।

বিএনপি এই নাম চাওয়ার প্রস্তাবে সাড়া দেবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কাছে এগুলোর কোনো মূল্য নেই, অর্থহীন। নাম দেওয়ার তো প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা গতবারের অভিজ্ঞতা এবং এর আগেরবারের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, কোনো লাভ হয় না। সরকারের পছন্দনীয় কমিশনই তারা করবে।’

এবারের গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে যে কমিশন গঠিত হবে, তার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচন হবে। তবে সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেই নির্বাচন হবে না। কারণ, জনগণ তাতে অংশ নেবে না।’ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে।

স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো আইন অনুযায়ী ইসি গঠিত হচ্ছে। এ জন্য গত ২৭ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ জাতীয় সংসদে পাস হয়। ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য গত শনিবার এই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।

গতকাল রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুসন্ধান কমিটির প্রথম বৈঠকে নাম চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি। ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেল পাঁচটার মধ্যে সিইসিসহ পাঁচটি পদে সুপারিশ করার জন্য অনধিক ১০ জনের নাম প্রস্তাব করতে পারবে দলগুলো।

গঠিত অনুসন্ধান কমিটি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটির মধ্যে বেশির ভাগ লোকই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। একজন আছেন, যিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এ ধরনের সার্চ কমিটি যে তারা করবে, তা আমরা জানি।’

অনুসন্ধান কমিটি গঠনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার মূলত প্রতারণা করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘মানুষকে প্রতারণা করা, দেখানো হচ্ছে, দেখো আমরা সুন্দরভাবে করছি। সবার কাছে থেকে মতামত নিচ্ছি। শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে যে হুদার (প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা) মতো লোকজনকেই তারা করবে।’

নতুন আইন অনুযায়ী, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করতে হবে অনুসন্ধান কমিটিকে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, অনুসন্ধান কমিটি চাইলে ১৫ কার্যদিবসের আগেও ইসি গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করতে পারবে।

পাঁচ বছর আগে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের সময়ও রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছিল অনুসন্ধান কমিটি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত ওই সব নাম প্রকাশ করা হয়নি।

আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে (সভাপতি) গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।

Back to top button