৯২ বছরে শেষ হলো কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের কর্মময় পথচলা। হাসপাতালে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর চলে গেলেন উপমহাদেশের সংগীতের এই প্রবীণ মহাতারকা। রোববার সকাল ৮টা ১২ মিনিটে মধ্য মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমসসহ বেশ কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করেছে। নিশ্চিত করেছেন ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এন সান্থানামও।
জানুয়ারি মাসের শুরুতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। এরপর তাকে ভর্তি করা হয় মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় নেয়া হয় আইসিইউতে। ৮ই জানুয়ারি থেকে আইসিইউতেই ছিলেন তিনি। শুরু থেকে চিকিৎসক প্রতীত সমধানীর চিকিৎসাধীন তিনি। প্রথমে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।একসময় কোভিড নেগেটিভ হলেও পরে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন।
লতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমেছে ভারত, এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলে। বিনোদনজগৎ তো বটেই, লতার মৃত্যুতে নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করছেন রাজনীতিবিদ, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে নানা জগতের মানুষ।
সম্প্রতি প্রবাদপ্রতিম গায়িকার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ভেন্টিলেশন সাপোর্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আশার আলো দেখছিলেন চিকিৎসকেরাও। তবে শনিবার লতা মঙ্গেশকরের শারীরিক পরিস্থিতির আবার অবনতি হয়। এদিন দুপুরে চিকিৎসকেরা জানান, গায়িকার অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।
সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই অনুরাগীরা তাঁর আরোগ্য কামনা করেছেন। এদিকে শনিবার সন্ধ্যাবেলা বোন লতাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান আশা ভোসলে। তখন থেকে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। ভক্ত, পরিবারের সবাই তাঁর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করতে থাকেন। চিকিৎসকেরাও চেষ্টা করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে যান কিংবদন্তিতুল্য এ শিল্পী।
সাত দশক ধরে দর্শক ও সমালোচকের হৃদয় তৃপ্ত করে চলা ভারতীয় সংগীতের এই কিংবদন্তি ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে জন্মেছিলেন। কিন্তু তাঁর সংগীত ভারত ছাপিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বসংগীতের দরবারে।সাত দশক ধরে দর্শক ও সমালোচকের হৃদয় তৃপ্ত করে চলা ভারতীয় সংগীতের এই কিংবদন্তি ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে জন্মেছিলেন। কিন্তু তাঁর সংগীত ভারত ছাপিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বসংগীতের দরবারে।
উল্লেখ্য, ১৯২৯ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর লতার জন্ম এক মারাঠি পরিবারে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারান। তার আগে অবশ্য বাবার হাত ধরেই অভিনয় এবং গান শিখতে শুরু করে দিয়েছিলেন। ১৩-১৪ বছর বয়সেই প্রথম বার সিনেমায় গান গাওয়া। মরাঠি ছবিতে। মুম্বই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে প্রথম হিন্দি ছবিতে গান করেন তিনি।