অপরাধআইন-আদালতএক্সক্লুসিভকক্সবাজারচট্টগ্রামবাংলাদেশ

সিনহা হত্যা মামলার আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায়

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি মো. লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ আসামীদের আদালতে আনা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা পৌনে ১টা দিকে কক্সবাজার আদালতে আনা হয় আসামিদের। এরপর তাদের জেলা দায়রা জজ আদালতের কাঠগড়ায় নেওয়া হয়।আজ কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতে সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের এএসআই মো. লিটন মিয়া, টেকনাফ থানার কনস্টেবল ছাফানুল করিম, মো. কামাল হোসাইন আজাদ, মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের তিন ব্যক্তি মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য-এসআই মো. শাহজাহান আলী, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও কনস্টেবল মো. রাজীব হোসেন এবং অপর দুই আসামি হলেন কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও কনস্টেবল সাগর দেব। আসামিদের মধ্যে প্রথম ১৫ জন কারাগারে আছেন। ১৪ আসামির মধ্যে ৯ জন জেলা পুলিশের সদস্য। এ ছাড়া ৩ জন মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের সোর্স।

এদিকে ছেলের হত্যার রায় শুনতে সিনহার মা নাসিমা আক্তার এখন কক্সবাজারে। মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বলেন, ‘আমার ভাই সিনহা হত্যা মামলায় রায় শুনতে সকালে মাকে নিয়ে আমরা উত্তরার বাসা থেকে রওনা হই। এখন আমরা কক্সবাজারে।’

এর আগে সকালে আদালতে হাজির হন সাবেক ওসি প্রদীপের আইনজীবী সমীর দাস গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘ওসি প্রদীপ খুনের নির্দেশ দিয়েছেন কিংবা পরিকল্পনা করেছেন, তার কোনো প্রমাণ রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি। তাই আমরা আশা করি, আদালত ওসি প্রদীপ বেকসুর খালাস দেবেন।’

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে নয়টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। তাঁর সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলামকে (সিফাত) পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তাঁর ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করে। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই দুজন পরে জামিনে মুক্তি পান।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‍্যাব। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন । তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

গত বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়।অভিযোগপত্রে থাকা ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ১২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

Back to top button