প্রভাবশালীর ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে প্রতারণার দায়ে আটক
নিজেকে কখনো মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন, কখনো সেনা কর্মকর্তার আপনজন পরিচয় দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ছুটতেন তিনি। শতভাগ চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন। নিয়োগপত্রও দিতেন। পরে সেগুলো ভুয়া প্রমাণিত হলে দিনের পর দিন ঘুরেও টাকা–চাকরি কোনোটাই পেতেন না ভুক্তভোগীরা।
এমন প্রতারণার অভিযোগে আজ শনিবার রাজশাহীর বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়নের সগুনা গ্রামের রানা বাবুকে (৪৫) আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ ঘটনায় প্রতারিতদের একজন বাদী হয়ে বাগমারা থানায় মামলা করেছেন।
প্রতারিতদের পক্ষে রাজশাহী র্যাব-৫–এর কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে র্যাব সদস্যরা আজ শনিবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করেন। পরে র্যাব-৫–এর সদর দপ্তরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। র্যাবের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁকে বাগমারা থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তারিক রব্বানী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন।
র্যাব-৫ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রানা বাবু দীর্ঘদিন ধরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এলাকার বেকার যুবক ও তরুণদের প্রতারিত করে আসছিলেন। বিভিন্ন বিভাগে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে সেগুলো নিয়ে বেকার যুবক ও তরুণদের কাছে যেতেন। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন। টাকা দিলে চাকরির শতভাগ নিশ্চয়তা দিতেন। এই প্রলোভনে পড়ে অনেকে টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, রানা বাবুর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বাগমারার পাশাপাশি নওগাঁতেও অনেকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁকে সেনাবাহিনীর বেসামরিক পদে নিয়োগের জন্য ৯ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। জমিজমা বিক্রি করে তাঁকে টাকা দেওয়া হয়। পরে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। বিষয়টি জানার পর টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করেন এবং হুমকি দেন। প্রতারিত হয়ে তিনি ও তাঁর পরিবার এখন পথে বসেছেন।
আরেক ভুক্তভোগী মঙ্গলপুর গ্রামের তারিক রাব্বানী বলেন, রানা বাবু নিজেকে এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে ১০ লাখ টাকা নেন। চাকরি না পাওয়াতে তিনি প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা শুরু করেন। দীর্ঘ দুই বছর ধরে হয়রানির পর তিনি র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন।