যুক্তরাষ্ট্রে অমিক্রনের আক্রমণ যখন থিতিয়ে এসেছে, তখন বিজ্ঞানীদের নজরে এল, এর আরেক রূপ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে ইউরোপ ও এশিয়ায়। ভারতে এরই মধ্যে এর অস্তিত্ব প্রবল—বলছেন সে দেশের বিজ্ঞানীরা।এর নাম দেয়া হয়েছে অমিক্রন বিএ–২।
কী তাহলে বিএ–২? এম হড ক্রফট বলছেন, একে বলা যেতে পারে অমিক্রন–১–এর সহোদর। অমিক্রন–১ থেকে এটি একগুচ্ছ মিউটেশনের (৩০-৬০ শতাংশ) অংশীদার হয়। আর বাকিটা এর নিজের।এর সংক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রেও আছে—ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস ও ওয়াশিংটনে।
এর বিস্তার ক্রমে বাড়বে—এমন অনুমান অনেকের। আর এটি অমিক্রনের পূর্বসূরি থেকে বেশি সংক্রামক হতেও পারে—বলছেন বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজিস্ট এমা হড ক্রফট। এর থাকতে পারে ছোটখাটো সুবিধা, বিএ–২ হতে পারে আরেকটু বেশি সংক্রামক (১-৩ শতাংশ)। কথা হলো, এই পার্থক্য কি অমিক্রন ঢেউকে প্রলম্বিত করবে?
এক রকমের হলেও যেন ভিন্ন। ঠিক সহোদরের মতো ভিন্ন হলেও সম্পর্কিত। গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা আর বতসোয়ানার বিজ্ঞানীরা অমিক্রনের তিনটি রূপ পেয়েছিলেন—বিএ–১, ২ আর ৩। বিএ–১ ছিল শক্তিশালী। তাই এটি উড়াল দিয়ে বিস্তার লাভ করল পৃথিবীতে। বিএ–২ আর ৩ ছিল তখন অপেক্ষাকৃত দুর্বল।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, ডেলটার চেয়ে অমিক্রন–১ কম গুরুতর রোগ ঘটায়। হতে পারে অমিক্রন বিএ–২ একই চরিত্রের। ডেনমার্কের সংক্রমণ নিরীক্ষণ করে তেমন ধারণাই আসে। আর হাসপাতাল গমন হতে পারে কম, টিকার তৃতীয় ডোজ হয়তো দেবেও এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা। তাই আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আর টিকার তিন ডোজ সম্পূর্ণ করার মধ্যে থাকি আপাতত।
বিএ-২ ইদানীং বেশ বিস্ময়ের কারণ হয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছে। কিছু দেশে এটি অমিক্রন বিএ-১-কে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। ডেনমার্কের কথা যদি ধরি, গত ডিসেম্বরে অমিক্রন-১-এর উত্তাল ঢেউয়ের পর থিতিয়ে এল যখন, তখন বিএ-২-এর ঢেউ শুরু। আর এখন করোনার অতিমারির ঢেউয়ে ডেনমার্ক বিপর্যস্ত। বিএ-২ নিল আধিপত্য আর এর প্রভাব ডেনমার্কে স্পষ্ট। রোগীর আরোহণ পর্ব চলছে খাড়াভাবে, ৪০ হাজার সংক্রমণ প্রতিদিন। ইংল্যান্ড আর জার্মানিতে চলছে এর ঝড়। তাহলে কি এটি বিএ–২–এর দুর্বল সহোদর নয়? বরং আরও শক্তিশালী সংক্রামক?