ছদ্মবেশধারী ফাঁসির আসামি ২০ বছর পর গ্রেপ্তার
উদ্বাস্তু থেকে ডাকাত দলের সদস্য। বাবুর্চি হিসাবে মাজারে রান্নার দায়িত্ব, আবার নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বেও নাম লেখায় সৈয়দ আহমেদ। অথচ ব্যক্তিটি পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি। ছদ্মবেশধারী এই আসামিকে ২০ বছর পর চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০শে মার্চ জানে আলমকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বড় ছেলে তজবিরুল আলম বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ২০০৭ সালের ২৪শে জুলাই বিচারিক আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সৈয়দ আহমেদসহ ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ৮ জনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল করেন। আপিলে সৈয়দ আহমেদসহ ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকিদের খালাস দেয়া হয়।
র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবসার বলেন, সৈয়দ আহমেদ জানে আলম হত্যাকাণ্ডের পরপরই চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ডাকাত দলের সঙ্গে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আত্মগোপন করে। প্রথম চার থেকে পাঁচ বছর পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ছেড়ে বাঁশখালী, আনোয়ারা, কুতুবদিয়া, পেকুয়ায়ার সাগর কূলবর্তী এলাকায় থাকতে শুরু করে। পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু এলাকায় উদ্বাস্তু হিসেবে অবস্থান করে।
সৈয়দ আহমেদ একপর্যায়ে জঙ্গল ছলিমপুরে মশিউর বাহিনীর প্রধান মশিউরের ছত্রচ্ছায়া ও সহযোগিতায় সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে।সৈয়দ আহমেদ দুটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র বানায়। পরিবার-পরিজন-আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখে। ফলে কোনোভাবেই শনাক্ত করা যাচ্ছিল না।
সৈয়দ আহমেদ চট্টগ্রামে বিভিন্ন মাজার এলাকায় বাবুর্চির কাজ শুরু করে। একপর্যায়ে সৈয়দ আহমেদ চট্টগ্রাম মহানগরের আকবরশাহ থানা এলাকার একটি বাড়িতে ছদ্মবেশে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ নেয়।চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আলোচিত ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলার এই আসামিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের আকবর শাহ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আজ শুক্রবার র্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবসার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।