বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোটাধিকার হারানো ১৮৪ জন শিল্পী প্রসঙ্গে মিথ্যাচার করায় মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার হুমকি দিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা আলমগীর। আজ রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা রাখতে গিয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এ অভিনেতা বলেন, কথায় কথায় পারভেজ ভাই, উজ্জ্বল ভাই, ফারুক এবং আমাকে দায়ী করা হয়। ১৮৪ জন বা ১৬০ জন আসল সংখ্যাটা আমি জানি না, তাদেরকে নাকি আমরা বাদ দিয়েছি। আমাদেরকে শিল্পী সমিতির উপদেষ্টা বানিয়েছে মিশা-জায়েদ।
তারাই আমাদের কাছে দুই–আড়াই শ সদস্য বাদ দেওয়ার নাম নিয়ে এল।ইন্টারিভিউতে গেলাম, সেই ইন্টারভিউতে একটা হাজিরা কাগজ হয় না, সেখানে আমরা সই করেছি, মানে আমরা হাজিরা খাতায় সই করেছি। সেই সইকে টেম্পারিং করে ওরা বলছে, আমরা নাকি বাদ দিয়েছি! উপদেষ্টা পরিষদের কি সেই অধিকার বা এখতিয়ার আছে ১৮৪ জনকে বাদ দেওয়ার?’কথাগুলো চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক এবং পরিচালক আলমগীরের।
এখন ভুল তথ্য প্রচার করছে। উপদেষ্টা কমিটির কোনো এখতিয়ার নেই কোনো শিল্পীকে বাদ দেয়ার। এটা এক্সিকিউটিভ কমিটির কাজ। আসলে মিথ্যার সীমা থাকা দরকার। ১৮৪ জন ভোটার বাতিলের কাগজপত্র আমাকে দেখাও। ইউটিউবের ভিডিওতে দেখলাম সম্মানীত সাধারণ সম্পাদক (জায়েদ খান) একটি ফাইল তুলে দেখাচ্ছেন এখানে সই আছে। আমি ওই ফাইলটা একবার দেখতে চাই। প্রমাণ না দিতে পারলে ওদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবো। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মগবাজারের একটি কনভেনশন সেন্টারে ইলিয়াস কাঞ্চন–নিপুণ প্যানেলের আনুষ্ঠানিক পরিচিতি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই আলমগীরের এই সিদ্ধান্তকে হাততালি দিয়ে সমর্থন জানান।
আলমগীর বললেন, ‘সমিতির সদস্য বাদ দেওয়ার কাজটি এক্সিকিউটিভ কমিটির কাজ। আমরা যে ইন্টারভিউ নিয়েছিলাম, সেখানে ৫০-৬০ জন ছিলেন, বাকি ১২০ জন কোথা থেকে এলেন! মিথ্যা বলার একটা সীমা থাকা দরকার। তারপর এই প্যানেলের আরেকজন প্রার্থী, আমাদের ছোট বোন পরীমনি, কিছুদিন আগে তাঁর কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল, তার সেই সমস্যা কোর্টে চলে গেল। কোর্টে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে আগে থেকে কেউ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাহলে এই শিল্পী সমিতি কী করে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীমনির সদস্য পদ স্থগিত করল! তাহলে কি কোর্টের ওপরে তারা (মিশা–জায়েদ কমিটি) চলে গেলে! এসব হতে পারে না। তারা অন্যায় করেছে।
ওরা (মিশা-জায়েদ) সব সময় প্রশাসনের ভয় দেখায়। সিরিয়াসলি বলছি, আমি এবার অ্যাকশন নেবো। দরকার হলে একাই নেব। প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের প্রার্থী রিয়াজ, ডি এ তায়েব, ফেরদৌস, সাইমন, নিরব, ইমন, কেয়া, শাহনূর, নানাশাহ, সাংকো পাঞ্জা, আরমান, গাঙ্গুয়া, সীমান্ত, জেসমিনসহ অনেকেই।
মিশা সওদাগর ও জায়েদ খান দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির দায়িত্বে থাকার সময় ১৮৪ জন শিল্পীর সদস্য পদ কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এ অভিযোগ দিয়ে ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার দাবিতে বঞ্চিত শিল্পীরা করোনার মধ্যে এফডিসির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন। ফেসবুক এবং ইউটিউবে নানা ধরনের বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর জায়েদ খান জানান, ভোটাধিকারবঞ্চিত শিল্পীদের তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে বাদ দেননি।
সেখানে আলমগীর, ফারুক, ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজসহ অনেকেরই স্বাক্ষর ছিল। এরই মধ্যে রিয়াজ জানিয়েছেন, জায়েদ খান স্বাক্ষরের যে বিষয়টি সবাইকে বলেছেন, সেটা জালিয়াতি করে করা এবং সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। তিনি কখনোই ১৮৪ জন শিল্পীকে বাদ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন না। বরং মিশা–জায়েদ ১৮৪ জনকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় রিয়াজ মিটিং থেকে বেরিয়ে আসেন। আজ শিল্পী সমিতির ইলিয়াস কাঞ্চন–নিপুণ প্যানেলের পরিচিতি অনুষ্ঠানে সই টেম্পারিংয়ের কথা বরেণ্য অভিনেতা আলমগীরও বললেন।