অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের পরও অনশনে অটল শাহরিয়ার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১৯ জানুয়ারি বেলা ২টা ৫০ মিনিট থেকে ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। তাঁদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহীন শাহরিয়ার। অনশনের দ্বিতীয় দিন থেকে থেমে থেমে পেটব্যথা হচ্ছিল তাঁর। গতকাল রোববার বিকেলে হঠাৎ পেটব্যথা বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান নুরুল কাইয়ুম মোহাম্মদ মোরসালিন বলেন, পেটব্যথার পাশাপাশি মাহীনের জ্বর ছিল। বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়লে রাত পৌনে ১১টার দিকে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়।উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম বলেন, অস্ত্রোপচারের পরও মাহীন অনশন ভাঙেননি। অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

এদিকে অনশনরত আরেক শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব বলেন, ‘১৯ জানুয়ারি থেকে আমাদের দাবি আদায় করতে দৃঢ় মনোবল নিয়েই অনশন চালিয়ে যাচ্ছি। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরও কেউ অনশন ভাঙেননি। আজ সোমবার সকাল সাতটা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৭ জন। শুরুতে ২৪ জন অনশন শুরু করলেও এক শিক্ষার্থীর বাবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় অনশন ছেড়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাঁকে। আর গত শনিবার রাত থেকে নতুন করে গণ-অনশনে যুক্ত হয়েছেন পাঁচ শিক্ষার্থী।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

গতকাল বিকেল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে মানবদেয়াল তৈরি করে রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছেন উপাচার্য। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ–সংযোগ। এতে ইন্টারনেটের সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উপাচার্যের বাসভবনে পুলিশ সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে যাতায়াতের সড়কে শিক্ষার্থীরা রাতভর অবস্থান করছিলেন।

Exit mobile version