শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বুধবার বিকেল ৩টা থেকে আমরণ অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে।ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সাড়া না দেওয়ায় আমরণ অনশনে অনড় রয়েছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে একে একে স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে এবং হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে অনশনরত শিক্ষার্থীদের।
সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে মোহাইমিনুল বাশার জানান, এই আন্দোলন এবং অনশন শুধুমাত্র ভিসির পদত্যাগের জন্য। রাজনৈতিকভাবে এটাকে ব্যবহার না করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
বৃহস্পতিবার সকালে এক শিক্ষার্থীর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং অন্য একজন বমি করে। পরবর্তীতে ডাক্তার চেক করে সেলাইন পুশের পরামর্শ দেন। এরপর দুপুরে কাজল দাশ নামে আরেক অনশনকারীর শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে রাগিব রাবেয়া হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পরবর্তীতে বিকেল ৫টার পর আরও ৫ শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে ধাপে ধাপে তাদেরকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সর্বশেষ রাত ৯টার দিকে আরও এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।এনিয়ে মোট ৬ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশন স্থল থেকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ডাক্তারের বরাত দিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী উমর ফারুক জানান, তারা পানিসহ কোনো ধরনের তরল খাদ্য গ্রহণ করছেন না। যার ফলে অনেকেই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যের অবনতির হচ্ছে। তবে ভিসির পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কেউ অনশন ভাঙবে না বলে সবাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।গতকাল বুধবার বিকেল ৩টা থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করে। ভিসির পদত্যাগ পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
আসাদুজ্জামান নামে একজন অনশনকারীর বাবা হার্ট অ্যাটাক করায় তাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে। এখন ২৩ জন শিক্ষার্থী অনশন করতেছে। এদের মধ্যে ১৭ জন ভিসির বাস ভবনের সামনে এবং ৬ জন হাসপাতালে অনশন করছে।অনশনরতদের মধ্যে ১১ জনকে সেলাইন দেওয়া হচ্ছে।এদিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি মেডিক্যাল টিম অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
এদিকে তিন দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসি কুমার দাশের নেতৃত্বে শতাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করেন কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদেরকে ভিসির পদত্যাগের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করার প্রস্তাব দেন, আর শিক্ষক বৃন্দ সেই প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে আলোচনার কথা নাকচ করে দেন।রাত ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আমরণ অনশনের ৩১ ঘন্টা পার হলেও ভিসি পদত্যাগ না করায় শিক্ষার্থীরা ভিসির বাস ভবনের সামনে অনশন পালন করছে।